ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজী ট্রাম্প

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৯, ৩১ জুলাই ২০১৮

ইরানের নেতাদের সঙ্গে `কোনও পূর্বশর্ত` ছাড়া এবং `তাদের সুবিধামত সময়ে` দেখা করার প্রস্তাব জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি যে কারও সঙ্গে বৈঠক করবো। আমি বৈঠকে বিশ্বাসী।’

চলতি মাসের শুরুতে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্তপ্ত মন্তব্য বিনিময়ের পর ট্রাম্পের এই বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব প্রকাশিত হলো।

মে মাসে একটি চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে আসে, যেই চুক্তিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড কমিয়ে আনার সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করার বিষয়ে প্রস্তাবনা ছিল।

২০১৫`র ওেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করা যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া আর জার্মানির আপত্তি সত্তেও কিছুদিনের মধেই তেহরানের বিরুদ্ধে আবারো সে সব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সঙ্গে শত্রুভাবাপন্ন ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।

ট্রাম্প গতকাল সোমবার বলেছেন, ‘তারা যদি বৈঠক করতে চায়, আমরা বৈঠক করবো।’

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের জবাবে প্রেসিডেন্ট রোহানির একজন উপদেষ্টা হামিদ আবুতালেবি টুইটে মন্তব্য করেছেন `পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসা` আর `ইরান রাষ্ট্রের অধিকারসমূহকে সম্মান` জানালে আলোচনার পথ সুগম হবে।

এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে ১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লবের পর এই প্রথম কোনও মার্কিন ও ইরানি শীর্ষ নেতা আলোচনায় বসবেন।

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর পরিণতি ভয়াবহ হবে- গত সপ্তাহে রোহানির এক মন্তব্যের ক্ষুদ্ধ সমালোচনা করেন ট্রাম্প।

জবাবে ট্রাম্প টুইট করেন যে `যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ালে এমন পরিণতি ভোগ করতে হবে যা আগে কখনও কাউকে করতে হয়নি।`

ইরানের সঙ্গে কোনও `নতুন চুক্তি` হতে হলে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার ও ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের সমর্থন বন্ধ করাসহ ১২টি শর্তের উল্লেখ করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের বিরোধিতা কি নিয়ে?

১. ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির সরাসরি বিরোধিতা করেছেন ট্রাম্প, যেই চুক্তির শর্ত রক্ষা করতে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে বিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ বিনিয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

২. ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের মতে পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়নের ফলেই ইরান ওই অঞ্চলে দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখতে পারছে। সিরিয়ায় শতাধিক ট্রুপ এবং কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী সশস্ত্র সেনা রয়েছে ইরানের।

৩. ইরানের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের অর্থ ও অস্ত্র সমর্থন দেয়ার অভিযোগ রয়েছে উপসাগরীয় দেশগুলোর, যদিও ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান মিত্র সৌদি আরব ঐ অঞ্চলে ইরানের অন্যতম প্রধান শত্রু।

যুক্তরাষ্ট্র কেন পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গেছে?

মে মাসে ইরান পরমাণু চুক্তিকে- বা জয়েন্ট কম্প্রিহেন্সিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) - ডোনাল্ড ট্রাম্প `ভয়ঙ্কর একপেশে চুক্তি` হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ওই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের `অস্থিতিশীলতা কার্যক্রমকে` প্রতিহত করেনি।

ইরান বরাবর বলে এসেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা`র (আইএইএ) নীতিমালা মেনেই তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও বলেছে, ইরান তাদের প্রতিশ্রুতিকে সম্মান জানিয়েই পরমাণু কার্যক্রম চালাচ্ছে।

বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি ইরান। প্রতি বছর বিলিয়ন ডলার মূল্যের তেল রফতানি করে তারা।

দেশের ভেতরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে চলা বিক্ষোভ ও ইরানি মুদ্রার (রিয়াল) দরপতনের কারণে এরই মধ্যে অর্থনৈতিক চাপের সম্মুখীন হয়েছে ইরান।

সূত্র: বিবিসি

একে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি