ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জম্মুতে পাকিস্তানের ব্যাপক গোলাবর্ষণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:২২, ২৩ মে ২০১৮ | আপডেট: ২২:২১, ২৩ মে ২০১৮

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মির সীমান্তের আর্নিয়াসহ প্রায় ১০০টি এলাকা প্রায় জনমানবশূন্য হয়ে নপড়েছে। সীমান্তের এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ভারী গোলাবর্ষণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। পাক বাহিনীর আক্রমণের মুখে প্রায় ৭৬ হাজার ভারতীয় নাগরিক সীমান্তের গ্রামগুলো ছেড়ে পালিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে আর্নিয়া শহরের অবস্থান। শহরটিতে সাড়ে ১৮ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস ছিল। গ্রাম ছেড়ে সবাই চলে যাওয়ায় বর্তমানে এই শহরটি ভূতুড়ে পল্লীতে পরিণত হয়েছে। তবে অল্প কিছু গ্রামবাসী ও পুলিশের সদস্য গ্রামটির বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছেন; যারা গ্রামের গবাদি পশু ও বাড়ি-ঘর লুট হওয়া ঠেকাতে পাহারা দিচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের জীবন যেন থমকে গেছে। ওই এলাকার পশু ও বাড়ি চুরি ঠেকাতে কিছু গ্রামবাসী ও পুলিশ পাহাড়া দিচ্ছে।

জম্মুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অরুণ মানহাস বলেন, অধিকাংশ বাসিন্দা অন্যত্র চলে যাওয়ায় আর্নিয়া শহরটি এখন জনমানবশূন্য। তারা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে অথবা সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গেছেন। সীমান্ত এলাকায় বেসামরিক নাগরিক ও পুলিশের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মানহাস।

তিনি বলেন, বুলেট প্রুফ গাড়িতে করে আর্নিয়া ও আরএস পুরা সেক্টরের ৯০টিরও বেশি গ্রামের মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেকেই নিজ থেকে চলে গেছেন।

মানহাস বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এসময় অন্তত ৭৬ হাজার মানুষ সীমান্তের গ্রামগুলো ছেড়ে গেছেন। সীমান্তের বাসিন্দাদের জন্য বেশ কিছু আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।

আরএস ও আর্নিয়া থেকে আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নেওয়া স্থানীয়দের বর্ণনায় পাকিস্তানি গোলাবর্ষণের চিত্র উঠে এসেছে। ভারতীয় এই নাগরিকরা বলেছেন, মর্টার বোমা ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে ছোঁড়া বোমার মুখে মনে হচ্ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছি। সর্বত্রই রয়েছে আহত, নিহত ও ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন।

 ১৯৭১ সালের পর তারা সীমান্তে পাক সেনাবাহিনীর এত ভয়াবহ গোলাবর্ষণ আর কখনোই দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন। এই সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

আর্নিয়ার ৭৮ বছর বয়সী বিশান দাস বার্তাসংস্থা পিটিআইকে বলেন, ১৯৭১ সালের পর এ ধরনের তীব্র ও ভারি গোলাবর্ষণ কখনোই দেখিনি। এমনকি যুদ্ধের সময়ও আমরা পাকিস্তানের এমন টার্গেটে পরিণত হইনি। তারা এখন আমাদের ওপর বৃষ্টির মতো মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে।

তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীরা প্রত্যেক বছর গোলাবর্ষণে মারা যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে যাক, এটা আমাদের দাবি। চিরতরে এই সমস্যাকে নির্মূল করুন।

তার মতোই সাত্তার দিন গুজ্জার নামের জম্মুর এক বাসিন্দা পাকিস্তানকে একটি শিক্ষা দেয়ার দাবি জানান। আরএস পুরা সেক্টরে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণে পুড়ে গেছে ভারতীয় এই নাগরিকের বাড়ি-ঘর।

সাত্তার দিন বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা যুদ্ধ চাই। তাদের শিক্ষা দেয়ার জন্য এটা চাই। আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে গোলাবর্ষণের শিকার হচ্ছি। এটা তৃতীয় প্রজন্ম চলছে; যারা প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে ছায়া করে বসবাস করছেন।

 তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।

 

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি