ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া

সুন্দরবনের শুটকি পল্লীতে নষ্ট হচ্ছে মাছ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০৫, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে দুযোর্গপূর্ণ আবহাওয়ায় সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন শুটকি পল্লীতে মাছ শুকাতে পারছে না জেলে-মহাজনেরা। একদিকে রোদ না থাকাসহ কুয়াশা ও বৃষ্টিতে মাছ শুকাতে না পারায় ইতিমধ্যেই কয়েক কোটি টাকার কাচা মাছ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দুবলা শুকী পল্লীর দায়িত্বে থাকা ক্যাম্প ইনচার্জ ফরেস্ট রেঞ্জার কাজী মোকাম্মেল কবির। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা মাছ আহরণে যেতে পারছে না গভীর সমুদ্রে। নানা প্রতিকুলতা ও একের পর এর দুর্যোগের কারণে দুবলারচরের শুটকি পল্লীর জেলে-মহাজনেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তসহ গত বছরের চেয়ে এবছর শুটকি খাত থেকে মোটা অংকের রাজস্ব ঘাটতির আশংকার কথাও জানিয়েছেন এই বন কর্মকর্তা।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ও শুটকি পল্লীর জেলে-মহাজন সূত্র জানায়, বঙ্গোসাগর পাড়ের সুন্দরবনের দুবলারচরে এখন মাছ শুকানোর পুরো মৌসুম চলছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ হঠাৎ নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়-বৃষ্টিতে মাছ ধরা ও শুটকিকরণের কাজ ব্যাহত হয়ে থাকে। দুবলার নিয়ন্ত্রণাধীন আশপাশের ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৩টি চরের কয়েক হাজার জেলে ও শতাধিক মহাজন এ সামুদ্রিক মাছ শুটকির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। এ সব চরে উৎপাদিত শুটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। আর সুন্দরবন বিভাগ মাছের এই শুটকি পল্লী থেকে প্রতি মৌসুমে দুই কোটি টাকার অধিক রাজস্ব পেয়ে থাকে। তবে রাজস্বের এ পরিমাণ কম-বেশি নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপরই।

সুন্দরবনের শুটকি পল্লীতে থাকা মহাজনদের ডিপো (মাছ কেনার ঘর) ম্যানেজার মো. ফরিদ হোসেন ও আবু রায়হান বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা ৫ দিনের দুযোর্গপূর্ণ আবহাওয়ায় জেলেরা সব জাল-নৌকা নিয়ে চরে অলস বসে রয়েছেন। মাছ ধরতে যেতে পারছে না। আর আগে তাদের আহরিত কয়েক কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রোদের অভাব ও বৃষ্টির কারণে শুকানোও সম্ভব না হওয়ায় তা পচেঁ নষ্ট হয়ে গেছে।

খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরী ও বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে জেলেরা সব ধরনের ঝড়-ঝাপটা মোকাবেলা করেই নিরাপদে মাছ আহরণ করে সুন্দরবনের জেলে পল্লীতে শুকিয়ে থাকে। কয়েক দিন ধরে দুযোর্গপূর্ণ আবহাওয়ায় সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন শুটকি পল্লীতে মাছ শুকাতে পারছে না জেলে-মহাজনেরা। সামনে আরও কয়েক মাস শুটকি মৌসুম রয়েছে। দুযোর্গপূর্ণ আবহাওয়ায় কারণে জেলে- মহাজনদের এ ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। দুবলা শুটকি পল্লীতে থাকা ফরেস্ট ক্যাম্প ইনচার্জসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঠিক রাজস্ব আদায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে সামুদ্রিক মাছ উল্লেখযোগ্য পরিমানে ধরা পড়ায় এবার আশা করছি শুটকি খাত থেকে এবার রাজস্ব আয় বাড়বে। তবে দুযোর্গপূর্ণ আবহাওয়ায় আরও বেড়ে গেলে রাজস্বের এ পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি