অটোরিকশা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আলটিমেটাম
প্রকাশিত : ২২:১৪, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ২২:৫২, ৩০ অক্টোবর ২০১৯

থ্রি হুইলারের লাইসেন্সধারী চালকদের ঢাকায় পাঁচ হাজার এবং চট্টগ্রামে চার হাজার সিএনজি অটোরিকশার অনুমোদনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ করে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে শ্রমিকরা।
বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যেগে আয়োজিত প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে এ দাবি জানায় চালকরা।
অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে অটোরিকশার মালিকদের নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত জমা ও দৈনিক জমা আরও বাড়ানোর প্রচেষ্টা এবং গ্যারেজ ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতের নাম করে জোরপূর্বক অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকর করার আগে প্রয়োজনীয় সংশোধন, ঢাকা মহানগরীর মধ্যে মিটারবিহীন, প্রাইভেট অটোরিকশা এবং পাশ্ববর্তী জেলার জন্য রেজিষ্ট্রেশনকৃত অটোরিকশা চলাচল অবিলম্বে বন্ধ, পাঠাও-উবার ইত্যাদি রাইড শেয়ারিংয়ের গাড়ীর সংখ্যার সিলিং এবং উক্ত গাড়ি-মটরসাইকেল চালকদের জন্য নির্দিষ্ট রঙের পোশাকের বিধান করা, পার্কিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ না করে নো-পার্কিং মামলা, রেকারিং, ডাম্পিং বন্ধসহ শ্রমিকদের ৮ দফার দ্রুত বাস্তবায়ন।
শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব হারুন-উর-রশিদ, যুগ্ম আহবায়ক ওমর ফারুক চৌধুরী, নজিমুদ্দিন রানা, যুগ্ম সদস্য সচিব কামাল আহমেদ প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক আহসান হাবিব বুলবুল।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, অটোরিকশার মালিকরা মামলা করে ড্রাইভারদের জন্য বরাদ্দকৃত অটোরিকশার অনুমোদন প্রক্রিয়া দীর্ঘ ১২ বছর ধরে আটকে রেখে শ্রমিকদের জিম্মি করে একচেটিয়া শোষণ-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। মামলায় পরাজিত হয়ে এখন সেই মালিকরা শ্রমিকদের নামে বিভিন্ন হঠকারী কর্মসূচী দিয়ে শ্রমিকদের ১০ বছরের ধারাবাহিক ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করে চালকদের জন্য অটোরিকশার অনুমোদন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করার চক্রান্ত করছে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সিএনজি অটোরিকশা মালিকরা অতিরিক্ত জমা আদায় অব্যাহত রাখার জন্য বৈধ অটোরিকশার সংখ্যা বৃদ্ধিকে পরিকল্পিতভাবে বাধাগ্রস্থ করার কারনেই প্রশাসনের দুর্নীতিগ্রস্থ কমকর্তাদের সহায়তায় অনুমোদনহীন অটোরিকশা চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকর করার আগে অজামিনযোগ্য শাস্তির ধারা বাতিলসহ প্রয়োজনীয় সংশোধন করার আহবান জানিয়ে বলেন, অর্থনীতির রক্তপ্রবাহ পরিবহন সেক্টরের স্পন্ধন গাড়ীচালকদের শ্রম অধিকার নিশ্চিত না করে, সড়ক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিয়ে, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি না করে শুধু গাড়ী চালকদের শাস্তির ভয় দেখিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘গত ২৪ অক্টোবর ঐক্য পরিষদের ৮ দফা বাস্তবায়নের জন্য বিআরটিএ চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। যার অনুলিপি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর পুলিশ কমিশনার মহোদয়দের কাছে দেওয়া হয়েছে। অদ্যবধি আমাদের দাবি বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। ’
পরে নেতারা দাবি আদায়ে আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, ‘আমরা আজকের এই সমাবেশ থেকে বলতে চাই, পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৮ দফা বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে প্রয়োজনে ধর্মঘটসহ অন্যান্য কঠোর কর্মসূচির কথা আমরা বিবেচনা করতে বাধ্য হবো।’
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোডসহ শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদিক্ষণ করে।
আরকে//
আরও পড়ুন