আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি হচ্ছে গাজায়
প্রকাশিত : ১৪:০৬, ১০ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের অবসানে ২০টি পয়েন্ট সম্বলিত নতুন যে পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সেটি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। এর ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সহিংসতা বন্ধ হবে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুমোদনের সংবাদ নিশ্চিত করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এক্সবার্তায় নেতানিয়াহু বলেছেন, “ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্কটি এই মাত্র অনুমোদন করল সরকার।”
তিনি অবশ্য গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এক্সবার্তায় কিছু বলেননি; তবে তার নেতৃত্বাধীন সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ফলে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে আর কোনো বাধা নেই এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর হবে যুদ্ধবিরতি।
রয়টার্সকে ওই মুখপাত্র আরও বলেছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে। তার পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় গাজায় আটক সব জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি এবং মৃত জিম্মিদের মরদেহ ইসরায়েলে নিয়ে আসা হবে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও দপ্তর হোয়াইট হাউসে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি পরিকল্পনার ব্যাপারে ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এ সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার পাশে ছিলেন।
সেদিন ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং স্থায়ী শান্তি স্থাপন সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনার কপি ইসরায়েল, হামাস এবং যুদ্ধের অপর দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং হামাস ব্যতীত বাকি সবাই তার পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছে।
পরে ৩ অক্টোবর শুক্রবার ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাস প্রাথমিক সম্মতি জানানোর পরের দিন ৪ অক্টোবর ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বলেন ট্রাম্প। তার পর ৬ অক্টোবর মিসরের লোহিত সাগর তীরবর্তী পর্যটন শহর শারম আল শেখ- এ ট্রাম্পের প্রস্তাবের ওপর বৈঠক শুরু হয় ইসরায়েল, হামাস, মিসর, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিদের মধ্যে।
সেই বৈঠকে দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলার পর ৮ অক্টোবর রাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রাথমিক পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইসরায়েল এবং হামাসের প্রতিনিধিরা। ৯ অক্টোবর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বার্তায় উভয় পক্ষের স্বাক্ষরের তথ্য নিশ্চিত করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প এই তথ্য নিশ্চিত করার ২৪ ঘণ্টা পর তার প্রস্তাবটি অনুমোদন করল ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর ইসরায়েলের গত ৭৭ বছরের ইতিহাসে এটি ছিল সবচেয়ে বড় ও প্রাণঘাতী হামলা।
হামাসের এই হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধার করতে পরের দিন ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েচেন আরও প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার।
ইসরায়েলের হিসেব অনুযায়ী, গাজায় এখনও ৪৮ জন জিম্মি আছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র : রয়টার্স
এমআর//
আরও পড়ুন