ঢাকা, শনিবার   ০৫ জুলাই ২০২৫

ক্যাসিনো খালেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:০৫, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ১৩:১৩, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া

Ekushey Television Ltd.

বিদেশে টাকা পাচার করার মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডে অভিযুক্ত ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াসহ ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ রোববার নিম্ন আদালতে এই অভিযোগপত্র দেওয়া হয় বলে সিআইডির মুখপাত্র ফারুক হোসেন নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগপত্রে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, তার ভাই মাসুদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও হাসান মাহমুদ ভূঁইয়া, খালেদের ম্যানেজার হারুন রশিদ, শাহাদৎ হোসেন উজ্জ্বল ও মোহাম্মদ উল্ল্যাহ খানের নাম উল্লেখ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং টেন্ডারবাজির প্রমাণ পাওয়া যাওয়ার কথা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর এ মামলায় খালিদের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

খালেদ ছাড়াও ক্যাসিনো ব্যবসায়ে অভিযুক্ত ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, ব্যবসায়ী জি কে শামীম ও কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিবসহ একাধিক অর্থ পাচার মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অস্ত্র ও মাদকসহ প্রথম গ্রেফতার হন খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং অভিযোগ আরও অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা রাখার অপরাধে ‘ফরেন একচেঞ্জ রেগুলেশনস আ্যাক্ট-১৯৪৭’-এ মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তদন্তে আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ভ্রমণ বৃত্তান্ত ও পাসপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায় তিনি পাসপোর্টে কোনও বিদেশি মুদ্রা এন্ডোর্সমেন্ট করা ছাড়াই বহুবার বিদেশে গেছেন। তিনি বিদেশে যাওয়ার সময় নগদ বিদেশি মুদ্রা পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতেন। আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার পাসপোর্ট নম্বর ‘বিএম-০২৮৯২৮১’-এর ৩১ পৃষ্ঠায় মালয়েশিয়ার ভিসা নম্বর-‘পিই০৫১১১৬৪’ লেখা আছে। যার ইস্যুর তারিখ ২০১৮ সালের ৪ মে উল্লেখ আছে। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা আছে ২০২১ সালের ৩ মে। ভিসাটিতে ‘এমওআইএস এমওয়াই-২ হোম’ লেখা আছে, যা ‘সেকেন্ড হোম ভিসা’ নামে পরিচিত। এই ভিসা নেওয়ার শর্ত হিসেবে মালয়েশিয়ার আরএইচবি ব্যাংকে ৩ লাখ রিঙ্গিত এফডিআর করা আছে, যা নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনি মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন। আসামির কাছ থেকে জব্দ করা বিদেশি ব্যাংকের ডেবিট কার্ডের মধ্যে আরএইচবি ব্যাংকের ডেবিট কার্ডও রয়েছে।

সিআইডির অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সিঙ্গাপুর সিটির  জুরাং ইস্ট এলাকায় মেসার্স অর্পণ ট্রেডার্স প্রা. লি. নামে খালেদের একটি কোম্পানি আছে। এই কোম্পানির মূলধনও বেআইনিভাবে হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে পাচার করেছে। খালেদ ও তার কোম্পানির নামে ব্যাংক হিসাব থাকার প্রমাণ হিসেবে ইউওবি ব্যাংকের ডেবিট কার্ডও জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া, তার নামে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্টে ২০ লাখ টাকার সমপরিমাণ থাই বাথ জমা থাকার তথ্য জানা গেছে। আসামির কাছ থেকে ব্যাংকক ব্যাংকের আরও দুটি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। সহযোগী আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ তার নির্দেশে বিদেশি মুদ্রা কেনেন। মোহাম্মদ উল্লাহ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। 

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আসামি মোহাম্মদ উল্লাহ ২০১২ সাল থেকে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার মালিকানাধীন ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া ডেভেলপার লি., মেসার্স অর্পণ প্রোপার্টিজ ও অর্ক বিল্ডার্স নামে তিনটি ফার্মের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি খালেদের নির্দেশে তার অপরাধলব্ধ আয় গ্রহণ করে খালেদের ভাই মাসুদ মাহমুদ ভূঁইয়ায় সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংকে অপরাধের টাকা জমা দিতেন। আসামি মোহাম্মদ উল্লাহর বিরুদ্ধে খালেদের অপরাধের আয় গ্রহণ, ব্যাংকে জমা এবং পাচারের জন্য অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা কেনার মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ে সহায়তা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে খালেদকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।


এমএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি