ঢাকা, শনিবার   ১৯ জুলাই ২০২৫

বিবিসির বিশ্লেষণ

নিরাপদ সড়ক: সমাধান সূত্র যেখানে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪৪, ৯ আগস্ট ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে রাজধানীতে পুলিশ যেমন ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করছে, আবার সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়াও চলছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব একটা নেই।

বাসগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাবে কারণে ঢাকা শহরে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।

চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের জন্য অনেকাংশে মালিকরাই দায়ি। এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

কারণ মালিকরা প্রতিদিন বাসটি চুক্তিতে চালকদের হাতে ছেড়ে দেয়। ফলে চালকদের মাথায় সব সময় চুক্তির বাইরে আরও বেশি টাকা আয় করার চিন্তা থাকে।

ঢাকা শহর যেহেতু অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে সেজন্য এখানকার রাস্তার নেটওয়ার্কও পরিকল্পিত নয়। ঢাকা শহরে উত্তর-দক্ষিণ মুখী সড়ক বেশি থাকলে পূর্ব-পশ্চিমমুখী সড়ক কম।

ড. রহমান বলেন, ‘সড়ক নেটওয়ার্ক ভালো না থাকায় ট্রাফিক সিগন্যালও কার্যকরী হয় না। পৃথিবীর অনেক দেশেই একই রাস্তায় বিভিন্ন আকারের যানবাহন চলে না। কিন্তু ঢাকা শহরের রাস্তায় ছোট-বড় নানা ধরনের যানবাহন একসাথে চলাচল করে। এ কারণে ঢাকা শহরে লেন মেনে গাড়ি চালানো সম্ভব হয় না।’

পরিবহন ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চাইলে কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক রহমান।

ঢাকা শহরে ২৭৯টি বাস রুট রয়েছে, একথা উল্লেখ করে অধ্যাপক রহমান বলেন, ঢাকার মতো ছোট একটি শহরে এতো বাস রুট থাকার প্রয়োজন নেই।

পুরো শহরকে বাস চলাচলের জন্য চার থেকে পাঁচটি রুটে ভাগ করে প্রতিটি রুটের জন্য একটি করে বাস কোম্পানি গঠন করা যেতে পারে বলে মনে করেন অধ্যাপক রহমান।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যারা মালিক আছেন, তারাই এসব কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হবেন। এরপর আনুপাতিক হারে মালিকদের মধ্যে মুনাফা বণ্টন করা যেতে পারে। বাস চালকদের জন্য মাসিক নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তখন চালকের মধ্যে বেপরোয়া ভাব আসবে না। তখন সড়কের শৃঙ্খলা কিছুটা সম্ভব হবে।’

ভারতের মুম্বাই শহরের উদাহরণ দিয়ে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, মুম্বাই শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব ঢাকার মতোই। কিন্তু সেখানে মাত্র তিন হাজার ৬০০ বাস প্রতিদিন ৪৮ লাখ যাত্রী পরিবহন করে।

অন্যদিকে, ঢাকায় রয়েছে ছয় হাজার বাস। এগুলো প্রতিদিন ৩০ লাখ যাত্রী পরিবহন করছে। অর্থাৎ গড়ে প্রতিটি বাস ৫০০ যাত্রী পরিবহন করছে।

কোম্পানি গঠনের পদ্ধতি অনুসরণ করলে ছয় হাজার বাস দিয়ে আরও বেশি যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে এবং তখন সড়কে কিছু শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে অধ্যাপক রহমান উল্লেখ করেন।

সূত্র: বিবিসি

একে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি