ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ জুলাই ২০২৫

‘বুলবুল’ থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:৫৯, ৯ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৬:০০, ৯ নভেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

‘বুলবুল’র প্রভাবে বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, খুলনাসহ কয়েকটি জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ঘোষণার পর থেকে জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলার গ্রামে গ্রামে মাইকিং করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির লোকজন। পাশাপাশি বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৬টি ইউনিট বিভিন্ন এলাকায় লোকজনদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করছেন। পুলিশও রয়েছে সতর্ক অবস্থায়।

তবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জানার পরও অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। বেশিরভাগই অপেক্ষা করছে চরম পর্যায়ের জন্য। এছাড়া ‘বুলবুল’র খবরে সাগরে থাকা মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকা তীরে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। তবে এখনও অনেক নৌকা ও ট্রলারকে মাছ ধরতে দেখা গেছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক।

শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে বাগেরহাট দড়াটানা নদীতে প্রায় দুই শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার সমুদ্র থেকে ফিরে এসেছে। ট্রলারে থাকা জেলেরা জানান, বুলবুল‘র খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে তারা চলে এসেছেন। সাগরে প্রচুর মাছ ছিল। তারপরও প্রাণ বাঁচাতে চলে এসেছি।

এখনো অনেক জেলে সাগরে রয়েছে জানিয়ে তারা বলেন,  বঙ্গোপসাগর থেকে ইচ্ছে করলেই চলে আসা যায় না। আসতে অনেক সময় লাগে।

শরণখোলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আমিনুল খান জানান, ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জানার পর থেকেই মানুষকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মাসুদ সরদার বলেন, বুলবুল‘র প্রভাব মানুষকে জানিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য আমাদের ৬টি টিম বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করছে। এছাড়া জেলার ৫টি স্টেশনে ৮টি টিম প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনে পাশ্ববর্তী জেলা থেকে কিছু ইউনিট বাগেরহাটের আনা হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুল ইসলাম বলেন, সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই প্রস্তুত রয়েছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ত্রিশ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি খাবারের আরো প্যাকেট তৈরির ব্যবস্থা চলছে।

দুর্যোগের সময় চিড়া যেহেতু বেশি প্রয়োজন হয়, তাই আমরা বাজারে কয়েকটি চিরা কলকে তৈরি রেখেছি, যাতে প্রয়োজন হলে তারা আমাদেরকে চিড়া সরবরাহ করতে পারেন। দুর্যোগে অধিক ঝুকিপূর্ণ উপজেলা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলাতে একাধিক টিম অবস্থান করছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, বুলবুল‘র প্রভাবে বাগেরহাটে বৃষ্টির গতি বেড়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলেও রাত থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে তা প্রবল আকার ধারণ করে। অবিরাম বৃষ্টিতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। তবে খেটে খাওয়া দিন মজুররা পেটের টানে বেড়িয়েছেন কাজের সন্ধানে।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে বাগেরহাট শহরের প্রেসক্লাব, মিঠাপুকুর ৫ পাড়, সাধারণার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা জনমানব শূন্য দেখা যায়। অন্যান্য দিনে এসব জায়গায় থাকে জানর্কীর্ণ। তবে বৃষ্টি দেখে স্থানীয় মানুষ এটাকে সিডরের মতো ভয়াবহ ঝড়ের আবাস মনে করছেন। কেউ কেউ এ ঝড়কে আকারের দিক থেকে সিডরের থেকেও বড় মনে করছেন।

জেলা প্রশাসক মামুনূর রশীদ বলেন, চারটি উপকূলীয় উপজেলা মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল ও মোংলার ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য কাজ চলছে। সুন্দরবনের দুবলার চরের শুঁটকিপল্লীর জেলেদের সরানোর জন্য  র‌্যাব, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে।

কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট ইমতিয়াজ আলম বলেন, ৫০০ জেলেকে আশ্রয়কেন্দ্রে এনেছি। অন্য জেলেদের আনার প্রক্রিয়া চলছে। প্রয়োজনে কোস্টগার্ডের নিজস্ব ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হবে।
এআই/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি