ঢাকা, রবিবার   ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের মেধাস্বত্ব পেল বাংলাদেশের ‘বঙ্গভ্যাক্স’ টিকা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:৪২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের তৈরি কোভিড-১৯ এমআরএনএ টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’ যুক্তরাষ্ট্রের মেধাস্বত্ব (পেটেন্টে) লাভ করেছে। এটি বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে ওষুধশিল্পে প্রথম মেধাস্বত্ব অর্জনের ঘটনা।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটি এ খবর নিশ্চিত করে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় যখন মানুষ বিপর্যস্ত তখন গ্লোব বায়োটেকের বিজ্ঞানী কাকন নাগ ও নাজনীন সুলতানার তত্ত্বাবধানে ‘কোভিড-১৯’ শনাক্তকরণ কিট, টিকা এবং ওষুধ আবিষ্কারের গবেষণা শুরু হয়। এ গবেষণার ফলশ্রুতিতে তৈরি টিকাটি বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) কর্তৃক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন পায়।

টিকাটির টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকুয়েন্স ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ডেটাবেসে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে এক ডোজের এই এমআরএনএ টিকার গবেষণাপত্র মার্কিন মেডিকেল জার্নাল ‘ভ্যাকসিন’-এ এবং টিকা উৎপাদনের মৌলিক প্রযুক্তি যুক্তরাজ্যের নেচার জার্নাল ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ প্রকাশিত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ২০২০ সালে গ্লোব বায়োটেকের এই টিকাকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বানরের উপর ট্রায়ালে এই টিকাটি সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়। এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে বানরের উপর টিকার প্রথম ট্রায়াল।

গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ অব কোম্পানিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড’ ২০১৫ সালে ক্যান্সার, আথ্রাইটিস, রক্তস্বল্পতা, উচ্চরক্তচাপ, অটোইমিউন ডিজিজসহ অন্যান্য দুরারোগ্য রোগ নিরাময়ের জন্য আধুনিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।

পেটেন্টের গুরুত্ব

গ্লোব বায়োটেক জানিয়েছে, এটি তাদের নিজস্ব উদ্ভাবিত মৌলিক প্রযুক্তির এমআরএনএ টিকা। ন্যানোটেকনোলজির উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এই টিকা এক ডোজেই কার্যকর এবং বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষম। একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সার, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য দুরারোগ্য রোগের আধুনিক ওষুধ তৈরি করা সম্ভব।

এটি বাংলাদেশের চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পেটেন্টের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে, নিরাপদ ও কার্যকরী টিকা উৎপাদন করে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও সম্ভব। এছাড়া ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় টিকা আবিষ্কারের এই পেটেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উত্তরণ এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই ধরনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি