যুগ্ম সচিবকে গাড়িতে জিম্মি করে ৬ লাখ টাকা দাবি চালকের
প্রকাশিত : ০৯:৫৫, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:০৫, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
সরকারের এক যুগ্ম সচিবকে নিজের গাড়ির মধ্যে জিম্মি করে ছয় লাখ টাকা দাবি করেন তাঁরই গাড়িচালক। তার আগে ওই যুগ্ম সচিবের আইনফোন কেড়ে নেন ওই চালক।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা ওই কর্মকর্তাকে সরকারি গাড়িতে আটকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘোরান ওই চালক।
একপর্যায়ে ওই যুগ্ম সচিবের কর্মস্থল পরিকল্পনা কমিশনে আসেন। তখন তাঁকে আটক করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বর্তমানে ওই গাড়িচালক পুলিশ হেফাজতে। বিকেলে তাকে শেরেবাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পাওয়া মাকসুদা হোসেন পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগে কর্মরত। তাঁর গাড়িচালকের নাম আবদুল আউয়াল (৪০)। তিনি দুই মাস ধরে ওই কর্মকর্তার গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এর আগে পরিকল্পনা কমিশনের আরেক যুগ্ম সচিবের গাড়ি চালাতেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পরিকল্পনা কমিশনের যুগ্ম সচিব ধানমন্ডিতে বসবাস করেন। প্রতিদিনের মতো বুধবার সকাল ৮টার পরে পরিকল্পনা কমিশনের উদ্দেশে গাড়িতে রওয়ানা দেন। কিন্তু চালক ধানমন্ডি থেকে বের হয়ে গাড়ি পরিকল্পনা কমিশনে না নিয়ে উত্তরা দিয়াবাড়িতে নিয়ে যান। এরপর গাড়ি নিয়ে যান টঙ্গীতে। এরপর যান ভাষানটেকে।
গাড়ি পরিকল্পনা কমিশনে নেওয়ার কথা বললে চালক যুগ্ম সচিবকে জিম্মি করে টাকা দাবি করেন। এরপর তিনি ওই গাড়ি আবারও টঙ্গী ও পরে সাভারের হেমায়েতপুর নিয়ে যান।
এ অবস্থায় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ৯৯৯- এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহায়তা চাইতে গেলে যুগ্ম সচিবের ফোন কেড়ে নেন চালক। পরে গাড়ি ইউটার্ন নিয়ে উত্তরা দিয়াবাড়িতে নেওয়া হয়। এভাবে প্রায় চার ঘণ্টা গাড়িতে আটকে রাখা হয় যুগ্ম সচিবকে।
যুগ্ম সচিব মাকসুদা হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে চালক গাড়ির দরজা লক করে দেন। এরপর গাড়ি উত্তরার দিয়াবাড়ি ঘুরে বেড়িবাঁধ হয়ে সাভারের হেমায়েতপুরের দিকে চালাতে থাকেন। পরে গাড়ি ঘুরিয়ে আবার দারুস সালাম হয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দুপুর ১২টার দিকে পরিকল্পনা কমিশনের সামনে আসেন।
জানা যায়, যুগ্ম সচিবের কাছে নিজের মায়ের চিকিৎসার জন্য ছয় লাখ টাকা দাবি করেন ওই চালক। তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা চান তিনি। তখন যুগ্ম সচিব বলেন, এই মুহূর্তে তাঁর কাছে টাকা নেই। অফিসে গেলে টাকা দেওয়া হবে। এ কথা বলার পর তাঁকে কমিশনের ভেতরে নিয়ে আসেন চালক আবদুল আউয়াল। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে আটক করেন।
যুগ্ম সচিব মাকসুদা হোসেন আরও বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আগেও দুটি মামলা ছিল। একটি মাদক সংক্রান্ত, অন্যটি রাজনৈতিক মামলা। কিন্তু নিয়োগের সময় বিষয়গুলো বুঝতে পারিনি। আমি ট্রমার মধ্যে আছি।’
একজন যুগ্ম সচিবকে জিম্মি করা হয়েছে, এই খবরে সকাল থেকে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা ওই গাড়ি ট্র্যাক করতে থাকে।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব শাকিল আখতার জানান, চালক একজন মাদকাসক্ত বলে তারা জানতে পেরেছেন। ওই কর্মকর্তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন চালক। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।
এএইচ
আরও পড়ুন










