লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনকে ‘বেআইনি’ বললেন
প্রকাশিত : ১১:১৭, ৯ জুন ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে ফের বিক্ষোভ হয়েছে। গত রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যালিফোর্নিয়া ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এই পদক্ষেপকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম।
সোমবার (৯ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বিক্ষোভকারীরা। ফেডারেল ভবনের চারপাশে মোতায়েন ছিল ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা। লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বেশ কয়েকটি সমাবেশকে ‘বেআইনি’ ঘোষণা করে জানায়, কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে কংক্রিট, বোতলসহ বিভিন্ন বস্তু ছুড়ে মারেন।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় শহরের একটি সড়কে কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ড হাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হন। ‘পার্টি ফর সোশ্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশন’-এর লস অ্যাঞ্জেলেস শাখা সিটি হলের সামনে এক সমাবেশের আয়োজন করলে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।
গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম বলেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনকে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতে মোতায়েন করা ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্যের আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে তিনি এই আদেশকে বেআইনি এবং ক্যালিফোর্নিয়ার রাজ্য সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “এটি একজন স্বৈরশাসকের কাজ, প্রেসিডেন্টের নয়।”
এদিকে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে গভর্নর নিউসামের বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেছে, “সবার চোখের সামনে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও আইন অমান্যতার ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
‘ইউএস নর্দার্ন কমান্ড’ জানায়, ক্যালিফোর্নিয়া ন্যাশনাল গার্ডের প্রায় ৩০০ সদস্যকে লস অ্যাঞ্জেলেসের তিনটি এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য হলো ফেডারেল কর্মী এবং সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
রোববার সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিক্ষোভকারীদের ‘হিংসাত্মক ও বিদ্রোহী জনতা’ হিসেবে অভিহিত করে জানান, তিনি তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
নিউ জার্সিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “আমরা যদি দেখি আমাদের দেশ এবং নাগরিকরা হুমকির মুখে পড়েছে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যবস্থা হবে অত্যন্ত কঠোর।”
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিবাসনবিরোধী কার্যক্রম আরও জোরালো হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন অন্তত ৩ হাজার অভিবাসী আটক করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই অভিযান বৈধ স্থায়ী বাসিন্দাদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে দাবি করা হয়েছে, যার ফলে একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে।
এসএস//
আরও পড়ুন