ঢাকা, সোমবার   ২৩ জুন ২০২৫

হরমুজ প্রণালি বন্ধের অনুমোদন ইরানের পার্লামেন্টে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:০০, ২২ জুন ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হরমুজ প্রণালি বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। আজ রোববার দেশটির পার্লামেন্টে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না।

রোববার (২২ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যম প্রেস টিভির খবরে জানানো হয়, এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার নেতৃত্ব দিয়েছেন ইরানি আইনপ্রণেতা এবং বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কোসারি।

তিনি জানান, হরমুজ প্রণালি বন্ধের বিষয়টি সংসদের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে এবং ‘যখন প্রয়োজন হবে তখনই’ এটি কার্যকর করা হবে।

হরমুজ প্রণালি ইরানের দক্ষিণে অবস্থিত ৩৫ থেকে ৬০ মাইল প্রশস্ত একটি জলপথ, যা পারস্য উপসাগরকে আরব সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। প্রতিদিন এই পথ দিয়ে প্রায় ২ কোটি ব্যারেল তেল ও তেলজাত পণ্য পরিবহন হয়, যা বিশ্বের মোট জ্বালানি সরবরাহের এক-পঞ্চমাংশ।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রণালিটি বন্ধ হলে বৈশ্বিক বাজারে তেলের দামে হঠাৎ বড় ধরনের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞ সংস্থা ভোরটেক্সার তথ্যে জানা গেছে, শুধুমাত্র সৌদি আরব এই রুট ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৬০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে।

এই প্রণালির ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে চীন, ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (EIA) জানায়, হরমুজ প্রণালি দিয়ে যাওয়া ৮২ শতাংশ অপরিশোধিত ও ঘনীভূত তেল সরাসরি এশিয়ার দেশগুলোতে যায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা জানায়, দেশটির আমদানি করা তেলের প্রায় ৬০ শতাংশই হরমুজ প্রণালির ওপর নির্ভরশীল। এমন পরিস্থিতিতে প্রণালি বন্ধ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো।

যুক্তরাষ্ট্র নিজেও এই প্রণালি ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৭ লাখ ব্যারেল তেল আমদানি করে, যা তাদের মোট আমদানির ১১ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ পেট্রোল ব্যবহারের প্রায় ৩ শতাংশ।

অন্যদিকে ইউরোপ তুলনামূলক কম নির্ভরশীল, প্রতিদিন ইউরোপীয় দেশগুলো প্রায় ১০ লাখ ব্যারেল তেল গ্রহণ করে হরমুজ প্রণালি দিয়ে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রণালিটি বন্ধের হুমকি নতুন কিছু নয়। অতীতেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার সময় ইরান একাধিকবার এমন হুমকি দিয়েছে। তবে বাস্তবে কখনোই প্রণালিটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হয়নি, কারণ এটি আন্তর্জাতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছে দিতে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরান সরকারের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে এমন সিদ্ধান্তে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন আরও বাড়তে পারে।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি