ঢাকা, শনিবার   ০৫ জুলাই ২০২৫

হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজের দাম বাড়লো কেজিতে ৭টাকা

হিলি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৯:০৮, ২৭ জুন ২০২১

Ekushey Television Ltd.

লকডাউনের খবরে ক্রেতাদের বাড়তি চাহীদা ও সরবরাহ কম থাকায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজের আড়তগুলোতে মাত্র একদিনের ব্যবধানে পেয়াজের দাম বেড়েছ কেজিতে ৬ থেকে ৭টাকা করে। তবে পেয়াজ কিনতে আসা ক্রেতাদের দাবী বাড়তি চাহীদাকে পুজি করেই ব্যবসায়ীরা পেয়াজের দাম বাড়িয়েছেন।

সরেজমিন হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারকদের আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সবগুলো আড়তেই কম বেশী পেয়াজ রয়েছে, সবগুলো আড়তেই পেয়াজ কিনতে আসা ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঠিক যেন পেয়াজ নিয়ে কাড়াকাড়ি অবস্থা বা হাহাকার উঠে গেছে। একদিন আগেও এই আড়তগুলোতে ব্যালেন্সের পেয়াজ কিছুটা নিন্মমানের (ছালউঠানো) বিক্রি হয়েছিল ১৬ থেকে ১৭টাকা কেজি দরে একদিনের ব্যবধানে সেই পেয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকা কেজি দরে। তারপরেও পেয়াজ নেই এমন অবস্থা। আর যে ভালোমানের পেয়াজ একদিন আগে বন্দরে ২৩ থেকে ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল সেই পেয়াজ আড়তে এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০টাকা কেজি দরে। একইভাবে হিলি বাজারেও খুচরাতে পেয়াজের দাম ২৪/২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

হিলি স্থলবন্দরের আড়তগুলো থেকে পেয়াজ কিনতে আসা মাজনার রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকার শুনতেছি একসপ্তাহের লকডাউন দিবে সে সময়ে পেয়াজের সরবরাহ থাকবে কিনা যার কারনে দাম বাড়তে পারে এই চিন্তা থেকে একটু বেশী করে পেয়াজ কিনতে এসেছি। আমরা নিয়মিতই পেয়াজ কিনে নিয়ে গিয়ে গ্রামের হাট বাজার গুলোতে বিক্রি করে থাকি। কিন্তু গতকাল যে পেয়াজ ১৬ থেকে ১৭টাকা বিক্রি হয়েছে সেই পেয়াজ দাম বেড়ে ২৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আমরা তো দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি, কি দামে কিনবো আর কিদামে বিক্রি করবো। আমার মতো অনেকেই পেয়াজ কিনতে এসে একই অবস্থার সন্মুক্ষিন হয়েছেন। একদিনের ব্যবধানে এমনকি হলো যে পেয়াজের দাম কেজিতে ৭টাকা বেড়ে গেলো সবআড়তেই পেয়াজ রয়েছে তারপরেও ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে পেয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

আড়তে পেয়াজ কিনতে আসা গৃহবধু আসমা খাতুন বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পেয়াজ, করোনার কারনে একসপ্তাহের লকডাউন দিচ্ছে শুনতেছি যার কারনে পরিবারের খাবারের জন্য এক বস্তা পেয়াজ কিনতে এসেছি। কিন্তু কিনতে এসে শুনি পেয়াজের দাম বেড়ে গেছে, আগের তুলনায় কেজি প্রতি ৪/৫ টাকা করে বেশী, তারপরেও দাম আরো বাড়তে পারে সে আশংকা থেকেই বাড়তি দামেই পেয়াজ কিনে নিলাম।

পেয়াজ কিনতে আসা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরাতো পেয়াজ কিনতে এসে বিপদের মধ্যে পড়ে গেছি। আজকে সকালেই শুনলাম ২২ টাকা কেজি পেয়াজ, আর এখন কিনতে এসে শুনতেছি ২৮ টাকা থেকে ৩০টাকা কেজি পেয়াজ। এতে তো আমাদের মতো সাধারন ক্রেতারা খুব বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে গেছি কি করবো না করবো। এদিকে আবার শুনতেছি যে আবার লকডাউন, তো লকডাউনের সময় বন্দরে তো পেয়াজ পাওয়া যাবেনা এজন্য বাধ্য হয়ে এখন বাড়তি দামেই পেয়াজ কিনতে হচ্ছে।  

হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ আমদানিকারক নাজমুল আলম চৌধূরী বলেন, গতকাল কনসার্নমেন্ট পুর্ন না হওয়ায় বন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি হলেও তা খালাস করা যায়নি। আজকে কনসার্নমেন্টের বাকি পেয়াজ ঢুকলে কনসার্নমেন্ট পুর্ন হলে বন্দর থেকে পেয়াজ খালাস হবে। তবে আগের দিনের কিছু ব্যালেন্সড পেয়াজ নিন্মমানের আছে যা বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকা থেকে ২৫টাকা কেজি দরে। আর ভালো মানের পেয়াজ ২৭ থেকে ৩০টাকা কেজি দরে। এছাড়াও বন্দর দিয়ে পাথরসহ অন্যান্য পণ্যের যানজটের কারনে স্বাভাবিক গতিতে পেয়াজ আমদানি না হতে পারার কারনেই দেশের বাজারে পেয়াজের সরবরাহ কমার কারনেই পেয়াজের দাম বাড়ছে বলেও দাবী করেন তিনি।

হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন,গতকাল হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন আমদানিকারকের মাত্র ৭ট্রাক পেয়াজ আমদানি হলেও কনসার্নমেন্ট পুর্ন না হওয়ায় তা খালাস হয়নি। কোন আমদানিকারকের হয়তো ৩ট্রাক ঢোকার কথা তার ১ট্রাক ঢুকেছে, আবার কারো ৪ট্রাক ঢোকার কথা তার হয়তো ২ট্রাক ঢুকছে যার কারনে কারো কনসার্নমেন্ট পুর্ন হয়নি একারনে কোন পেয়াজ খালাস হয়নি। এর কারনে গতকাল বাজারে পেয়াজের সরবরাহ কম ছিল।এর উপর লকডাউন দিচ্ছে, এর মধ্যে হয়তো আর পেয়াজ ঢুকবেনা যার কারনে পেয়াজের দাম বাড়বে এমন খবরে গ্রামের যত ছোট পাইকার ছিল সকলে ভ্যান রিক্সা সাইকেলে করে পেয়াজ কিনতে চলে এসেছেন। যার কারনে চাহীদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ কমায় দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। যে পেয়াজ বন্দরে বিক্রি হয়েছিল ২৪/২৫ টাকা সেই পেয়াজ আড়তে বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০টাকা করে। 

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আমদানি একটু কম মনে হচ্ছে শনিবার বন্দর দিয়ে যেখানে ৩৬টি ট্রাকে ১ হাজার ৬টন পেয়াজ আমদানি হয়েছিল। গতকাল রবিবার সেখানে ৭টি ট্রাকে ১৮২টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২ট্রাক পেয়াজ খালাস হয়েছে, বাকি ৫ট্রাক পেয়াজ বন্দরে হল্টেজ অবস্থায় রয়েছে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি