রাজশাহীতে মাস্ক না পড়ায় শাস্তি দিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
প্রকাশিত : ১৯:১৭, ২৭ মার্চ ২০২০

রাজশাহীতে বাড়ি থেকে বের হওয়া লোকজনকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। এ সময় বেশকিছু লোকজনকে স্বাস্থ্য বিধি অমান্য করে বের হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তি দেয়া হয়। বিশেষ করে মাস্ক না পড়ে বের হওয়া অনেককে শান্তি দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থানে টহল দেয় সোনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ। এসময় মাস্ক ব্যবহার না করে ঘুরে বেড়ানোয় কয়েক যুবককে কান ধরে উঠবস করায় র্যাব ও পুলিশ। এ সময় করোনা ভাইরাস সম্পর্কে ধারণা ও প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে প্রচার চালানো হয়।
বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে পুলিশসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দেয়। এসময় লোকজনকে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। শহরে ঘুরাঘুরি করা অবস্থায় কয়েকজন যুবককে আটক করা হয়। পুলিশ তাদেরকে বাইরে ঘুরাঘুরির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে, ওই যুবকরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এ সময় তাদের মুখে মাস্ক পরা ছিল না।
তিনি বলেন, প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে বাইরে মাস্ক হীন অবস্থায় ঘোরাঘুরি করার অপরাধে পুলিশ ওই যুবকদের কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন। কান ধরে উঠবস করার পর ছাড়া পেয়ে তারা বাসায় ফিরে যায় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে, করোনা ভাইরাস ছড়ানোর শঙ্কার মধ্যে রাজশাহীর বাজারে কেনাকাটার সময় স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। শুক্রবার সকালে মাংসের দোকানসহ কাঁচাবাজার ও মুদির দোকানগুলোতে ভিড় করে ক্রেতাদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।
আর গরুর মাংস বিক্রির দোকানে মূল্য তালিকায় বেশ দাম লেখার দায়ে এক ব্যবসায়ীর ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সাবেহবাজার এলাকার জালাল উদ্দিনের মাংসের দোকানে এই জরিমানা করে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রাজশাহীর নিউ মার্কেট এলাকার মাংস বিক্রেতা মুর্তুজা আলী বলেন, ক্রেতাদের বার বার বলা হচ্ছে ফাঁক ফাঁক হয়ে দাড়ান। কিন্তু তারা শুনছেন না। এক সঙ্গে এসে দোকানের সামনে ভিড় করছে। ফলে তারাও কিছুটা আতঙ্কের মধ্যেই মাংস বিক্রি করেছেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান-আল-মারুফ জানান, গরুর মাংসের তালিকায় বেশি দাম লেখা ছিলো। মূলত ওই ব্যবসায়ী সেই দামে বিক্রি করছিলেন মাংস। এই অভিযোগ তাকে জরিমানা করা হয়।
এদিকে, ১ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিদেশ থেকে রাজশাহী এসেছেন ১৬৪৮ জন। তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে আনতে পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় আরও ১০৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫১৯ জনই বিদেশ ফেরত।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় মোট ৭১১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে আনা হয়। এর মধ্যে ১৪ দিন পূর্ণ হওয়ায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ১৯২ জনকে। শুক্রবার পর্যন্ত করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি বলে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান।
কেআই/এসি
আরও পড়ুন