ঢাকা, মঙ্গলবার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

আশুলিয়ায় দুই বান্ধবীকে গণধর্ষণ, ৪ কিশোর আটক

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১১:৫৯, ৮ অক্টোবর ২০২০

ঢাকার কাছে আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের হাতে দুই কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে ঘটনার ৩৫ দিন পর সেই ভিডিও ফাঁস হলে বিষয়টি নজরে আসে। টাকার বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে ধর্ষকের পরিবার। এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেছে নির্যাতিত কিশোরীদের। 

অভিযোগ না পেলেও ইতিমধ্যে পুলিশ অভিযানে চালিয়ে ৪ ধর্ষককে আটক করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ ভুক্তভোগী এক কিশোরীকে তাদের হেফাজতে নিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে।

গত মঙ্গলবার গভীর রাতে আশুলিয়ার ভাদাইল ও আশপাশের এলাকা থেকে অভিযুক্ত ৩ যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে খুলনা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের মূলহোতা সারুফকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো- আলামিন, জাকির, রাকিব ও সারুফ। তারা ভাদাইল এলাকাতেই বসবাস করে। গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা পলাতক রয়েছে। 

ভুক্তভোগীদের সাথে বেড়াতে যাওয়া কিশোর ইসরাফিল জানায়, ‘আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় ভাড়া থেকে চুল কারখানায় কাজ করত ভুক্তভোগীরা। প্রায় ৩৫ দিন আগে একই বাসার ভাড়াটিয়া দুই কিশোরের সাথে দুই বান্ধবী ভাদাইলের গুলিয়ারচক এলাকায় বেড়াতে যায়। এ সময় তাদের চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেলে প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের ১২ থেকে ১৪ জন সদস্য। পরে ভুক্তভোগীর সাথে বেড়াতে যাওয়া দুই কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এক পর্যায়ে তাদের মারধর করে এক জায়গায় বসিয়ে রাখে। পরে ভুক্তভোগীদের একটু আড়ালে নিয়ে ১২ জন কিশোর ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে। ভিডিও ফাঁস হলে ভুক্তভোগী দুই বান্ধবী গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হয়।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার প্রায় ১ মাস পর কিশোর গ্যাংয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ধারণ করা ভিডিও ফাঁস হয়ে যায়। এতে করে গ্যাংয়ের প্রধান সারুফের বাবা আকবর আলী প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্যসহ অভিযুক্তদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে স্থানীয় মাদবরদের নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পরে ধারণকৃত ভিডিওর মাধ্যমে শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে ৩ ধর্ষককে আটক করেছে পুলিশ।

এছাড়া ধর্ষণের শিকার নারীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক আসওয়াদুর রহমান জানান, ‘ভিডিও ফাঁস হওয়ার পরপরই কোন অভিযোগ না পেলেও তদন্তে নামে আশুলিয়া থানা পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে তিন গ্যাং সদস্যকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়দের মোবাইল ফোনে ভাদাইল এলাকায় দুই কিশোরীকে গণধর্ষণের একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেয় কে বা কারা। পরে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি পুলিশের নজরে আসলে পুলিশ স্ব-উদ্যোগে তদন্তে নামে এবং গণধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ভাদাইল ও আশপাশের এলাকা থেকে ৩ যুবকে আটক করে। পরে খুলনা থেকে আটক করা হয় মুল হোতা সারুককে।’

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ৩০ আগস্ট ওই দুই কিশোরী দুই আত্মীয়ের সাথে ভাদাইল পবনারটেক এলাকায় ঘুরতে গেলে আটক ৪ কিশোরসহ আরও কয়েকজন জোড়পূর্বক তাদেরকে গণধর্ষণ ও মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। 

এছাড়া কিশোররীদের দুই আত্মীয়কে বেদম মারধর করে আগেই তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পরপরই এক কিশোরী গ্রামের বাড়িও চলে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এআই/এমবি


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি