ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে পুলিশের কোষ্টার আটক

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৬:০৭, ৪ আগস্ট ২০২১

লকডাউনে সাধারণ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে পুলিশ বিভাগের লোগোযুক্ত একটি টেলিকম কোষ্টার গাড়ি আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্য রাতে নাটোর শহরের চকরামপুর এলাকা থেকে ওই টেলিকম কোষ্টারটি ৪০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কোষ্টারের যাত্রী সূত্রে জানা যায়, পুলিশ বিভাগের লোগোযুক্ত নম্বরবিহীন ওই কোষ্টারে মঙ্গলবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে ঢাকার যাত্রী ওঠানো হয়। যাত্রীদের অধিংকাংশই গার্মেন্টস কর্মী। পুলিশের গাড়ি রাস্তায় আটকাবে না বলে বেশি ভাড়া নিয়ে গাদাগাদি করে লোক তোলা হয় বলে জানান যাত্রীরা।
 
আমেনা বেগম, রুনা বেগম ও হোসেন আলীসহ গাড়ির কয়েকজন যাত্রী জানান, নাচোল শ্যামলী কাউন্টারের মাষ্টার ওই গাড়ীর চালকের সাথে কথা বলে তাদেরকে এ গাড়িতে তুলে দেয়। পুলিশের গাড়ি পথে আটকাবে না তাই নিরাপদে যাওয়ার কথা বলে জনপ্রতি ২ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। কোষ্টারটি ২৬ সিটের হলেও তাতে প্রায় ৪০ জন যাত্রী ওঠানো হয়।

এদিকে, পুলিশের ওই টেলিকম কোষ্টার গাড়িটি ঢাকায় যাওয়ার পথে নাটোর শহর অতিক্রম করার সময় চকরামপুর এলাকায় পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সাথে লেগে লুকিং গ্লাস ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে  ট্রাকচালকের কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন কোষ্টার চালক ফিরোজ হাসান। এসময় প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে নাটোর থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয় এবং গাড়িটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

কোষ্টার চালক ফিরোজ হাসান জানান, মঙ্গলবার ঢাকার রাজারবাগ থেকে সাতজন পুলিশ অফিসারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নামিয়ে দেন। ফেরার পথে পুলিশ টেলিকম এন্ড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্টের ওসি টান্সপোর্ট রেজাউল করিমের নির্দেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে নাচোল থেকে কয়েকজন গার্মেন্টস কর্মীকে নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হন। কত টাকা ভাড়া মিটিয়েছে তা ওসি স্যার জানেন। 

সম্পূর্ণ অনিয়ম হলেও রেজাউল স্যার সরকারি গাড়িতে লোক তুলে আনতে বলেন। স্যারের হকুমে এই কাজ করা হয়েছে। গাড়িটি পুলিশ বিভাগের সরকারি গাড়ি। এটি ঢাকায় সরকারি কাজে ব্যবহার হয়। তবে ট্রাক চালকের কাছে টাকা দাবির অভিযোগ সঠিক নয় বলে জানান চালক ফিরোজ। 

লুকিং গ্লাস ভেঙ্গে ফেলা নিয়ে ট্রাক চালক ও হেলপারের সাথে বাক বিতণ্ড হয়েছে বলে স্বীকার করেন ফিরোজ।

এসময়ে কোষ্টার চালক ফিরোজ হাসানের মাধ্যমে ওসি টান্সপোর্ট রেজাউল করিমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, গাড়িটি পুলিশ বিভাগের সরকারি গাড়ি। তবে লকডাউন হওয়ার কারণে সাতজন পুলিশ অফিসারকে ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নামিয়ে দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। চালক যাত্রী তুলে নিজে বাঁচার জন্য আমার কথা বলেছে। এটি অনিয়ম হয়েছে।

তবে ঘটনার সাথে তিনি কোনভাবেই জড়িত নন। এধরনের কোন নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন ওসি টান্সপোর্ট রেজাউল করিম।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি ওই গাড়িতে যাত্রী ওঠানোর বিষয়টি প্রমাণিত। ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। পরে সকল যাত্রীকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। 

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি