ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

শ্রীমঙ্গলে অধ্যাপক ড. প্রদীপ দাশকে সম্মাননা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৭:১৬, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২

মৌলভীাজারের শ্রীমঙ্গলের কৃতি সন্তান লন্ডনের নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রদীপ দাশকে নাগরিক সম্মাননা দিয়েছেন শ্রীমঙ্গলবাসী।

ডঃ প্রদীপ দাশের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহনের বিদ্যালয় শ্রীমঙ্গল চন্দ্রনাথ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রদীপ দাশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজের অনেক প্রবীণ শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। 

এ সময় শ্রেষ্ট শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় চন্দ্রনাথ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রনেবশ কুমার চৌধুরী অন্তু ও অনিতা দেবকেও সম্মাননা দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে ড. প্রদীপ দাশের সম্মানে আয়োজন করা হয় বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবু সুলতান মোহাম্মদ ইদ্রিছ লেদুর সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ে এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর সৈয়দ মুয়ীজুর রহমান, প্রফেসর নৃপেন্দ্র লাল দাশ, প্রফেসর লোকেশ চন্দ্র দেব, প্রফেসর হরিষ চন্দ্র পাল চন্দ্রনাথ, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জানকী মোহন দেব, শ্রীমঙ্গল ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক কবি দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্য্ধসঢ়;য, হার্ট ফাউন্ডেশন শ্রীমঙ্গল এর সাধারণ সম্পাদক ডা: হরিপদ রায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়, মৌলভীবাজার জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কিশোলয় চক্রবর্তী, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার কাউন্সিলার সাদ উদ্দিন, ড. প্রদীপ দাশের শশুর অজয় দেব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহর তরফদার প্রমূখ।

সম্মাননা প্রাপ্ত ড. প্রদীপ দাশ শ্রীমঙ্গল রুপসপুর এলাকার প্রয়াত প্রফুল্ল কুমার দাশ ও নিশা রানী দাশের দ্বিতীয় সন্তান। ডঃ প্রদীপ দাশের জন্ম ও বেড়ে ওঠা শ্রীমঙ্গলের হবিগঞ্জ রোড এ। ডঃ প্রদীপ ১৯৮৩ সালে চন্দ্রনাথ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক, ১৯৮১ সালে ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক, এবং ১৯৯১ সালে শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজ হতে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে সমাপ্ত
শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর যন্ত্রকৌশল বিভাগ হতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ সম্মান সহ প্রথম স্থান অধিকার করেন। 

এই কৃতিত্বের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডঃ প্রদীপ কে ২০০১ সালে ‘ভি জি দেশা’ স্বর্ণপদকে ভূষিত করেন। ডঃ প্রদীপ শ্রীমঙ্গলের প্রথম ছাত্র যিনি বুয়েটের কোনো বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং স্বর্ণপদক অর্জন করেন।

ড. প্রদীপ ২০০৩ সালে কানাডার ‘আলবর্টা ইনজেনুইটি’ বৃত্তি নিয়ে আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাস্টার্স এবং ২০১০ সালে কানাডা সরকারের মর্যাদাপূর্ণ আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল কানাডা ফেলোশিপ নিয়ে ওয়াটারলু
বিশ্ববিদ্যালয় হতে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। তার পিএইচডি এর গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল- হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল বা জ্বালানি কোষের কর্মক্ষমতার উন্নতি করা।

কর্মজীবনে ডঃ প্রদীপ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট এর কাকৌশল বিভাগে লেকচারার ও সহকারী অধ্যাপক হিসাবে ১৯৯৮ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। এরপর তিনি পিএইচডি শেষ করে আমেরিকার সানফ্রান্সিস্কোতে বিখ্যাত লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাব এ পোস্টডক্টরাল স্কলার হিসাবে চার বছর কাজ করেন। বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ড এর নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এ সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন। নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি জ্বালানি কৌষ ছাড়াও নবায়নযোগ্য শক্তি, লিথিয়াম-আয়ন খাটারি, বৈদ্যুতিক গাড়ী ও গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন প্রশমন এর উপর গবেষণা করছেন। 

জ্বালানি কোষ ছাড়াও ডঃ প্রদীপ বৈদ্যুতিক গাড়ীর ব্যাটারির পুনঃব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার এই অবস্থান এর জন্য আমেরিকান সোসাইটি অফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স ২০১৮ সালে “ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল এনার্জি কনভার্সন এবং স্টোরেজের উদীয়মান তদন্তকারীর” সম্মানে ভূষিত করে। এ ছাড়াও ড. প্রদীপ এর একশ টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ মর্যাদাপূর্ণ জার্নালে প্রকাশিত হয়। ড. প্রদীপ এর গবেষণার উপর ভিত্তি করে ইতমধ্যে ৩ জন ছাত্র পিএইচডি ডিগ্রী পেয়েছেন এবং বর্তমানে আরো ৪জন ছাত্র ডঃ প্রদীপ এর অধীনে পিএইচডি এর গবেষণা করছেন।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি