ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

যমুনার ভাঙ্গন ঠেকাতে শুরু হয়েছে চর ড্রেজিং

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:১২, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩

সিরাজগঞ্জে নদী ভাঙ্গনে বিপর্যস্ত এনায়েতপুর ও পুর্ব শাহজাদপুর এলাকা রক্ষায় নদীর গতিপথ পরিবর্তনে প্রথম বারের মত যমুনায় চর খনন শুরু করেছে পাউবো। প্রকল্পের আওতায় জালালপুর ও কৈজুরী ইউনিয়নে ৩২শ’ মিটার লম্বা ও ১শ’ মিটার প্রস্থ করে ৩ মিটার গভীর করা হচ্ছে। 

তবে এ প্রকল্পের সুবিধা হতে বাদ পড়েছে চৌহালীর এনায়েতপুর স্পারবাধ হতে পাকড়তলা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকা। তাই এখানে চলমান ভাঙ্গনের মাত্রা বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

এদিকে নদীতে জেগে ওঠা ১ কিলোমিটার প্রস্থের চরের মাত্র ১শ’ মিটার কাটা হলেও তীর রক্ষা হবেনা বলে স্থানীয়দের আশঙ্কা। তারা দাবি, পরিকল্পিতভাবে পুরো মাঝের চর অপসারণসহ তা বাড়িয়ে ৬ কিলোমিটার লম্বা করে খননের। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিষয়টির উপর গুরুত্বরোপ করে খনন প্রকল্প সম্পসারণে এলাকাবাসীকে লিখিতভাবে জানানোর কথা বলেছে। 

স্থানীয়রা জানান, কৈজুরী ইউনিয়নের মোনাকষা, পাঁচিল হতে উত্তরে জালালপুরে ভেকা, পাকড়তলা, খুকনীর আড়কান্দি, ব্রাক্ষণগ্রাম ও চৌহালীর এনায়েতপুর পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার যমুনার ভাঙ্গনে বিপর্যস্ত। গত ৭ বছরে বেশ কয়েকটি গ্রাম বিলীনে অন্তত ৫ সহস্রাধিক ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ হাজার হাজার একর আবাদী জমি ভেঙ্গে গেছে। 

যমুনার পূর্ব পাড়ে চর জেগে ওঠায় নদীর পানি পশ্চিম দিকে বহমান হওয়ায় বেড়েছে ভাঙ্গন। 
ড্রেজিংয়ের উদ্যোগে বেশ উচ্ছ্বসিত মোনাকষা, চর পাঁচিল গ্রামের সাধারণ মানুষ। চর পাঁচিল গ্রামের ফটিক আলী ফকির, সাবেক মেম্বর আব্দুস সালাম, রশিদ শেখ জানান, এলাকার হাজারো ঘর-বাড়ি অন্যান্য স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে। সবার দাবি ছিল, ভাঙ্গনরোধে কার্যকরি পদক্ষেপের। তবে দেরীতে হলেও ভাঙ্গন ঠেকাতে নদীর গতিপথ পরিবর্তনে ড্রেজিং ও উত্তোলিত বালু তীরে ফেলার কাজ শুরু হওয়ায় আমরা আশার আলো দেখছি।

৩২শ’ মিটার থেকে বাড়িয়ে ৬ কিলোমিটার খননের আওতায় আনার দাবি করছেন নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘাটাবাড়ি গ্রামের মোজাম্মেল হক, বৃদ্ধা মায়া খাতুন।

প্রথম দিকে নির্ধারিত ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ের খনন প্রকল্পে ৬ মিটার গভীর, ১০০ মিটার ও ১৬শ’ মিটার খননের কথা থাকলেও পরবর্তীতে লম্বায় তা দ্বিগুণ ও প্রস্থ ঠিক রেখে ৩ মিটার গভীর করার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করা হয়। এছাড়া এনায়েতপুর-ব্রাক্ষনগ্রাম হতে কৈজুরী মোনাকষা পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার ভাঙ্গন এলাকার মধ্যে মাত্র ৩ কিলোমিটার ২শ’ মিটার খননের উদ্যোগ নেয়া হয়। 

তবে এর সুফল পাচ্ছেনা উত্তরে চলমান নদী ভাঙ্গনে বিপর্যস্ত ব্রাক্ষণগ্রাম, আড়কান্দি, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা।  যা এখন পুরোপুরী অরক্ষিত রয়েছে। উল্লেখিত এলাকা সম্পৃক্ত করে নদীর পূর্ব পাশের চর কেটে এখানেও একইভাবে মাটি ফেলার দাবি জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর।


এদিকে ড্রেজিং কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স ম্যানেজার অপারেশন মোঃ আলম মিয়া জানান, বিশাল চরের মধ্যে যেটুকু কেটে অপসারণের প্রকল্প দেয়া হয়েছে সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। আশা করছি, আগামী বন্যার আগেই কাজ শেষ করতে পাবরো।  

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য খনন কাজ শুরু হয়েছে। তবে এই কাজ সম্প্রসারণের জন্য এলাকাবাসীর দাবি থাকলে লিখিতভাবে জানাতে পারে।

তিনি আরও জানান, স্থায়ীভাবে এলাকা রক্ষায় ৬৪৭ কোটি টাকার প্রকল্পে গত বছর শুরু হওয়া কাজ আবারও পুরোদমে চলবে। আশা করছি, আগামী ৩ মাসের মধ্যে অনেকটা এগিয়ে যাবে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি