ঢাকা, মঙ্গলবার   ০১ জুলাই ২০২৫

সম্রাটের মুক্তির দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ (ভিডিও)

ফেনী প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১২:৫৯, ৭ অক্টোবর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

নানা নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে রোববার (৬ অক্টোবর) কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছেন ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ খ্যাত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। 

এ সময় তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকেও আটক করে র‍্যাব।  র‌্যাবের হাতে আটকের পর দল থেকেও বহিষ্কার করা যুবলীগের এই নেতাকে। বর্তমানে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছে।  

মূলত ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্যাসিনো ও জুয়াবিরোধী অভিযানের পরপরই "ক্যাসিনো সম্রাট" হিসেবে সম্রাটের নাম উঠে আসে। তবে আলোচিত এই যুবলীগ নেতা ক্যাসিনো ও মাদকের ব্যবসায় রাতারাতি কোটিপতি হলেও তার পৈতৃক বাড়ীতে একটি দোতলা ঘর ছাড়া নেই কোনো সম্পত্তি। 

সম্রাটের গ্রেফতারের খবর তার এলাকায় পৌঁছলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। 

দেশব্যাপী যখন তার গ্রেফতারে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে, তখন তার মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। এ নিয়ে নতুন করে আলোচনায় সম্রাট। 

এলাকবাসী জানান, ঢাকার আন্ডার গ্রাউন্ডের বস খ্যাত হলেও নিজ এলাকায় মসজিদ মাদ্রাসা তৈরিসহ অসহায় মানুষের পাশে সবসময় দাঁড়াতেন সম্রাট। মাঝে মধ্যেই তিনি এলাকায় আসতেন। 

তারা জানান, সম্রাট আওয়ামী রাজনীতির পরিবার থেকেই উঠে এসেছে, তিনি কোনো হাইব্রিড নেতা নন। তারপরও তার বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে তার বিচার দাবি করেন তারা। তবে সম্রাটকে যেন অযথা হয়রানী করা না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী। 

জানা গেছে, ফেনীর পরশুরামের মির্জানগড় ইউনিয়নের সাহেব নগর চৌধুরী বাড়ীর মৃত ফয়েজ আহম্মদের মেজে ছেলে ঈসমাইল হোসেন সম্রাট। তার বাবা ছিলেন রাজউকের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। সম্রাট থাকেন রাজধানীর মহাখালীর বাসায়। তার গ্রামের বাড়ি পরশুরামে হলেও সেখানে ছোট বোন ও মা  ছাড়া থাকেন না কেউ।

সম্প্রতি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর সম্রাটসহ অনুসারীরা গা ঢাকা দেয়। এরপর রোববার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।

জানা গেছে, ৯০ দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নাম লেখান সম্রাট। পরে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সবশেষ কাউন্সিলে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নির্বাচিত হন।

তার সভাপতি হওয়ার পথ পরিস্কার হয়ে যায় দক্ষিণ যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা মিল্কীর হত্যাকাণ্ডের পর। এ সময় থেকে সম্রাটকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। 

মতিঝিল, ফকিরাপুল, পল্টন, কাকরাইল, বাড্ডা এলাকায় অপরাধ জগতের একক আধিপত্য তৈরি করেন সম্রাট। তাই ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে রাজধানীর জুয়াড়িদের কাছে বেশ পরিচিত নাম ছিল তার। রাজনীতির পাশাপাশি তার নেশা ও পেশা ছিল জুয়া খেলা। 

ক্যাসিনো চালিয়ে মাসে ৪০ লাখ টাকা কামাতেন সম্রাট। যার অধিকাংশেই চলে যেত সিঙ্গাপুরে। সেখানেও নাকি জুয়া খেলার উদ্দেশ্যেই যেতেন যুবলীগের এ নেতা। রোববার কাকরাইলে তার নিজ কার্যালয়ে অভিযান চালানোর সময় গণমাধ্যমকে এ কথাই জানান সম্রাটের প্রথম স্ত্রী শারমিন চৌধুরী।  

এদিকে, সম্রাট পরিবারের দাবি, তার বাড়ীতে পৈতৃক একটি দোতলা বাড়ী ছাড়া কোনো কিছু নেই। সম্রাট কোনো খারাপ কাজে জড়িত থাকতে পারেন, এমনটা বিশ্বাস করতে নারাজ তার পরিবারের সদস্যরা। তাকে হয়রানী না করতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

আই/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি