ঢাকা, শুক্রবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খানের জন্মবার্ষিকী আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫১, ৬ জুলাই ২০২১

Ekushey Television Ltd.

দেশের অন্যতম সেরা সরোদ বাদক ও সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খানের ৬৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৫৮ সালের আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন। 

তার স্মরণে জয়ন্তী উদযাপনের আয়োজন করেছে ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান সংগীত ফাউন্ডেশন। এ উপলক্ষে থাকছে লাইভ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান। এতে থাকবে গান ও স্মৃতিচারণ পর্ব। 

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনায় অংশ নেবেন সরোদ বাদক ও সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ আশীষ খান। আরও রয়েছেন ওস্তাদ ইউসুফ খান (তবলা), আফসানা খান (সিতার), রুখসানা খান (সরোদ), সিরাজ আলী খান (সরোদ), জাকির হোসেন (তবলা), তানিম হায়াত খান রাজিত (সরোদ) প্রমুখ।

শাহাদাত হোসেন খানের শিষ্য ও পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে আছেন পারভেজ খান (সরোদ), মুরসালিন হিমু (সিতার), খাজা মো. মাসুম বিল্লাহ (বাঁশি), পৃথুল অর্ণব (সরোদ) প্রমুখ। 

স্মৃতিচারণ পর্বে থাকছেন ওস্তাদ আশীষ খান, কবি আলফ্রেড খোকন, সিতার বাদক অধ্যাপক রিনাত ফৌজিয়া ও মনিরুল ইসলাম।

আয়োজন প্রসঙ্গে ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক পূরবী খান বলেন, ‘এই মহতী আয়োজনের মাধ্যমেই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নবগঠিত ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান সংগীত ফাউন্ডেশন। যথাসময়ে উক্ত অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে আমাদের এই উদ্যোগকে সার্থক করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

জানা যায়, অনুষ্ঠান শুরু হবে আজ (৬ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ নভেম্বর মারা যান ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান। মৃত্যুর পর প্রথমবারের মতো এটাই জয়ন্তী আয়োজন।

উল্লেখ্য, শাহাদাত হোসেন খান একজন বাংলাদেশী উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সরোদ বাদক ও সুরকার ছিলেন। উপমহাদেশের অন্যতম এক সঙ্গীত পরিবারে তার জন্ম হয়। ১৯৭২ সালে তিনি ও তার চাচা বাহাদুর হোসেন খান যুগলবন্দি হয়ে আলাউদ্দিন সঙ্গীত সম্মেলনে সরোদ পরিবেশন করে প্রশংসিত হন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

শাহাদাত হোসেন খান ১৯৫৮ সালের ৬ জুলাই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লা জেলার এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান একজন প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ও সেতার বাদক। তার দাদা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ এবং ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ছোট ভাই। তার দুই চাচা প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ বাহাদুর হোসেন খান এবং সঙ্গীত গবেষক ও লেখক মোবারক হোসেন খান।

সাত বছর বয়সে পিতার কাছে শাহাদাত হোসেনের তবলা ও সরোদের হাতেখড়ি হয়। পরে তিনি তার চাচা বাহাদুর হোসেন খানের কাছে সরোদের তালিম গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে আলাউদ্দিন সঙ্গীত সম্মেলনে বাহাদুর হোসেনের সাথে যুগলবন্দি হয়ে সরোদ পরিবেশন করেন। ১৯৮১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ১৯৮৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার আলী আকবর কলেজ অব মিউজিক থেকে সঙ্গীত বিষয়ে স্নাতক সম্মানের ‘বাদ্যলংকার’ ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীতের শিক্ষক ও প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সরকারী সঙ্গীত কলেজের ডেমোনেস্ট্রেশন-কাম-লেকচারার, সংগীত বিষয়ক বক্তা ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উচ্চতর প্রশিক্ষণ কোর্সে সেতার, সরোদ, বেহালা, বাঁশি ও গিটারের প্রশিক্ষক এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সঙ্গীত একাডেমিতে কণ্ঠ ও যন্ত্রসঙ্গীতের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি মৃত্যুহীন প্রাণ ও মিট বাংলাদেশ নামক দুটি প্রামাণ্য চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। ২০০০ সালে যুক্তরাজ্য থেকে একটি সিডি প্রকাশিত হয়। পরে সেখান থেকে আরেকটি এবং বাংলাদেশ থেকে তিনটি সিডি ও ক্যাসেট প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে রিপলস ইন মেডোস্‌ সিডিটি প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে।

শাহাদাত হোসেনের দুই যমজ মেয়ে আফসানা খান সেতার বাদক ও রুখসানা খান সরোদ বাদক।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ২৮ নভেম্বর ঢাকার উত্তরায় একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি