ঢাকা, রবিবার   ২০ জুলাই ২০২৫

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চির ভূমিকা দুঃখজনক : নোবেল প্রধান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪২, ৩ অক্টোবর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

মিয়ানমারে সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে সে দেশের নারী নেত্রী অং সান সু চির ভূমিকা কিছু ক্ষেত্রে ‘দুঃখজনক’ হলেও তার নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রত্যাহার করা হবে না বলে জানিয়েছেন নোবেল ফাউন্ডেশনের প্রধান লারস হেইকেনস্টেন। সম্প্রতি স্টকহোমে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান তিনি।

নোবেল ফাউন্ডেশনের প্রধান বলেন, এক পুরস্কার প্রদান করা হলে অন্য কোন ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তা কেড়ে নেওয়ার যায় না।সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারে গণতন্ত্রের দাবিতে অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৯১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান সু চি। মিয়ানমার বেসামরিক সরকার ব্যবস্থায় ফিরলে ২০১৫ সালে নির্বাচনে জিতে সু চি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর হন। মিয়ানমারের বেসামরিক প্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখন সু চিরই হাতে। তবে সাংবিধানিকভাবে সেনাবাহিনী এখনও বিপুল ক্ষমতাধর।

গত বছর অগাস্টে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরুর পর তা ঠেকানোর কোনো চেষ্টা না করে উল্টো সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গাওয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচনার মুখে পড়েন মিয়ানমারের ‘ডি ফ্যাক্টো’ নেত্রী।

রাখাইনে দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়ে গত এক বছরে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। নাফ নদীর দুই তীরে সৃষ্টি হয়েছে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সঙ্কট।

২০১২ সালে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে সু চি তার নোবেল বক্তৃতা দেন ২০১২ সালে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে সু চি তার নোবেল বক্তৃতা দেন গত মাসে প্রকাশিত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ থেকেই রাখাইনের অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটিয়েছে।
আইন প্রয়োগের নামে ভয়ঙ্কর ওই অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করারও সুপারিশ করেছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন।

সেখানে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চির বেসামরিক সরকার ‘বিদ্বেষমূলক প্রচারকে উসকে’ দিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ‘আলামত ধ্বংস’ করেছে এবং সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে ‘ব্যর্থ হয়েছে’। আর এর মধ্যে দিয়ে মিয়ানমার সরকারও নৃশংসতায় ‘ভূমিকা’ রেখেছে।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন মনে করে, নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া সু চি বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় তার ‘নৈতিক কর্তৃত্ব’ ব্যবহারে ব্যর্থ হয়েছেন।

এ বিষয়ে নোবেল ফাউন্ডেশনের প্রধান হেইকেনস্টেন বলেন, “মিয়ানমারে সু চি যা করছেন তা যে বেশ প্রশ্নবিদ্ধ, তা আমরা দেখছি। আমরা মানবাধিকারের পক্ষে, এটা আমাদের অন্যতম প্রধান মূল্যবোধ। অবশ্যই বিস্তৃত অর্থে তিনি এর (রাখাইনে দমনপীড়ন) জন্য দায়ী, যা খুবই দুঃখজনক।”

মিয়ানমার সরকার জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের ওই তদন্ত প্রতিবেদনকে ‘একপেশে’ আখ্যায়িত করে আসছে। তাদের দাবি, রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার কারণে আইন মেনেই ওই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

বড় ধরনের কোনো অপরাধের কথা স্বীকার না করলেও সু চি গত মাসে এক অনুষ্ঠানে বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি হয়ত আরও ভালোভাবে সামলানো যেত।

টিআর/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি