ঢাকা, বুধবার   ১৫ মে ২০২৪

কাবুলের গুরুদুয়ারা হামলায় মিলছে পাকিস্তানের যোগসুত্র

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৫, ১৩ এপ্রিল ২০২০

সারা বিশ্ব করোনা মোকাবেলায় ব্যস্ত ও এক প্রকার অসহায়। আর এর মধ্যেই গত ২৫ মার্চ আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শিখ ধর্মের অনুসারীদের উপাসনালয়ে হামলা করে জঘন্য মস্তিষ্কের দুষ্কৃতীরা। মুহূর্তের এই হামলায়  মৃত্যুবরণ করেন ২৮ জন নিরীহ শিখ ধর্মের অনুসারী। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই যদিও ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দোষ স্বীকার করে আইএস জঙ্গিগোষ্ঠী। 

তবে এই জঘন্য হামলার পেছনে পাকিস্তানের যোগসূত্র আছে বলে ধারণা করছে আফগান গোয়েন্দা সংস্থা।

গত ২৫ মার্চ কাবুলের গুরুদ্বারে হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হল, ইসলামিক স্টেট  খোরাসান প্রদেশ (আইএসকেপি)-এর তথাকথিত আমির মাওলায়ি আবদুল্লা ওরফে আসলাম ফারুকি-কে। জানা গিয়েছে, শনিবার আফগানিস্তানের স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের হাতে গ্রেফতার হয় ফারুকি।

২০১৯ সাল থেকে তিনি খোরাসান প্রদেশে আইএসকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ফারুকি পাকিস্তানের নাগরিক। আগে লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একসময় লস্কর-ই-তৈবা ও পরে তেহরিক-ই-তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিল এই ফারুকি। গত বছর এপ্রিল মাসে মাওলয়ি জিয়া-উল-হক ওরফে আবু ওমর খোরসানি-র জায়গায় ফারুকি-কে আইএসকেপি-র প্রধান হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। মামোজাই উপজাতির মানুষ ফারুকির বাড়ি পাক-আফগান সীমান্তের এবং ওরাকজাই এজেন্সি অঞ্চলে। 

কাবুল ও দিল্লির সন্ত্রাসবিরোধী বিভাগের কর্তাদের মতে, আফগানিস্তানের হাক্কানি নেটওয়ার্ক এবং লস্কর-ই-তৈবার নির্দেশেই মাওলায়ি ফারুকী কাবুলের শোর বাজারের ওই গুরুদ্বারে হামলা চালিয়েছিল।

আফগানিস্তানে ভারতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে অন্যান্য সমস্ত বড় হামলার পেছনে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক  অবস্থান লক্ষ্য করা যায় , এবং ঐতিহাসিকদের দাবি যে এই হামলার লক্ষ্য কাশ্মীরে ভারতীয় ক্রিয়াকলাপের প্রতিশোধ নেওয়ার লক্ষ্যে করা হয়েছিল বলে ধারণা করা যায়।

তবে ওই দিন আইএসকেপি-র হামলার মূল লক্ষ্য কাবুল-এর ভারতীয় দূতাবাস, এমনটাই দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের। তারা জানিয়েছে, আফগানিস্তানে তালিবানদের সঙ্গে শান্তি-চুক্তি করছে মার্কিনিরা। এই অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় এলাকার স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে মার্কিন সেনারা আফগান মাটি ছাড়লে সেই দেশের পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা নিক ভারত। ঘটনাক্রম সেই দিকেই এগোচ্ছে। আর পাকিস্তান এবং তালিবান দুইপক্ষই চায় আফগানিস্তানের নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ থেকে ভারতকে দূরে রাখতে। সেই কারণেই শুধু কাবুল নয়, জালালাবাদ, হেরাত এবং কান্দাহারে-এও ভারতীয় দূতাবাস-এ হামলা হওয়ার হুমকি রয়েছে। ভারত অবশ্য সুরক্ষার স্বার্থে আপাতত ওই দূতাবাসগুলি থেকে কর্মীদের সরিয়ে দিয়েছে।

আফগান নিরাপত্তা বাহিনী মনে করছে ফারুকি-কে চাপ দিলে তার গোষ্ঠীর অন্যান্য নেতাদেরও খোঁজ পাওয়া যাবে। নাঙ্গরহর, নূরস্তান, কুনার, কাবুল এবং কান্দাহার এলাকা জুড়ে আইএসকেপি সদস্যদের জাল বিছিয়ে রয়েছে বলে তাদের অনুমমান। তবে নিরীহ শিখদের উপর হামলার নির্দেশ আসলে কে দিয়েছিল সেটা বের করাটাই সবার আগে দরকারি বলে মনে করা হচ্ছে। এই সন্ত্রাসবাদী হামলার পিছনে পাকিস্তানের কী ভূমিকা ছিল তাও জানার জন্য মাওলায়ি ফারুকি-কে জেরা করবে আফগান জাতীয় সুরক্ষা দপ্তর।
 
তথ্যসূত্র: The European foundation for South Asian Studies (EFSAS)

এমবি//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি