হৃদয় মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি অ্যামনেস্টির
প্রকাশিত : ১২:২৯, ৯ এপ্রিল ২০২২ | আপডেট: ১৩:১২, ৯ এপ্রিল ২০২২

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার মুন্সীগঞ্জের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
শনিবার এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, ওই ঘটনা বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সর্বশেষ দুর্গের উপর সরাসরি আঘাত।
গত ২০ মার্চ মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান পড়ানোর সময় প্রসঙ্গক্রমে শিক্ষার্থীর প্রশ্নে ধর্ম নিয়ে কথা বলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল।
কয়েকজন শিক্ষার্থী সেই কথা রেকর্ড করে এবং পরে ধর্ম নিয়ে ‘আপত্তিকর’ কথা বলার অভিযোগ তুলে কিছু শিক্ষার্থী ও ব্যক্তি এলাকায় তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। ওই অবস্থায় এ শিক্ষককে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়।
ঘটনার দুদিন পর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী (ইলেক্ট্রশিয়ান) মো. আসাদ বাদী হয়ে হৃদয় চন্দ্রের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ২৩ মার্চ তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করলে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পরে জামিন আবেদন করা হলেও মুন্সীগঞ্জ বিচারিক হাকিম এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তার জামিন হয়নি।
শিক্ষার্থীদের সেই অডিও রেকর্ডের তথ্য দিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ওই শিক্ষক যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘ধর্ম হলো বিশ্বাসের ব্যাপার’, কিন্তু ‘বিজ্ঞান নির্ভর করে প্রমাণের উপর’। রেকর্ডিংয়ে শিক্ষক বলেছেন, ‘ধর্মে কোনো প্রমাণ নেই। ধর্ম সবশেষে বলে, ঈশ্বর সব দেখভাল করবেন। ধর্ম মুখস্ত শব্দ শেখায়, যেখানে বিজ্ঞান প্রমাণ দেখায়’।”
অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়ার ডেপুটি রিজিওনাল ডিরেক্টর স্মৃতি সিং বলেছেন, এটি খুবই ভয়ংকর, একজন শিক্ষক ক্লাসে পড়াতে গিয়ে শুধু মত প্রকাশের জন্য নিজেকে কারাগারে দেখতে পান। কোনো আঘাতের ভয় ছাড়াই শিক্ষকদের সব ধরনের ধারণা ও মতামত নিয়ে আলোচনা করা উচিত।
“কেবল মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করার জন্য অবিলম্বে ও নিঃশর্তে হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে মুক্তি দিতে হবে”, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে, শিক্ষকরা যাতে ভয় ছাড়াই ক্লাসে অবাধে কথা বলতে পারেন।
এএইচএস/ এসএ/
আরও পড়ুন