‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’
ভুল তথ্য দেওয়ায় ক্ষমা চাইলেন এ কে খন্দকার
প্রকাশিত : ১৯:১৪, ১ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৯:৩৭, ১ জুন ২০১৯

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়ায় জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বইয়ের লেখক ও সাবেক মন্ত্রী এ কে খন্দকার। শনিবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
সাড়ে চার বছর আগে ২০১৪ সালে প্রথমা প্রকাশনী কর্তৃক বইটি প্রকাশিত হয়। বইটিতে তিনি উল্লেখ করেন ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ‘জয় বাংলা’ নয় ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছিলেন।
বইটি প্রকাশ হওয়া মাত্র স্বয়ং নিজ দলেই প্রত্যাখ্যাত হন সাবেক এ মন্ত্রী। এরপর সংসদ ও সংসদের বাহিরে তোপের মুখে পড়েন এ কে খন্দকার। তাৎক্ষণিকভাবে বইটি সরিয়ে নেওয়া হয় বাজার থেকে।
এতো সমালোচনার মধ্যেও সাড়ে চার বছর নিরব ছিলেন সাবেক এ মন্ত্রী। গেল সপ্তাহে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অনানুষ্ঠানিকভাবে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান তিনি। অতঃপর আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের দায় স্বীকার করে বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও জাতির কাছে ক্ষমা চান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “যেভাবেই আমার বইতে আসুক না কেন, এই অসত্য তথ্যের দায়ভার আমার। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে কখনই ‘জয় পাকিস্তান’ শব্দ দুটি বলেননি।
“আমি তাই আমার বইয়ের ৩২ নম্বর পৃষ্ঠার উল্লিখিত বিশেষ অংশ সম্বলিত পুরো অনুচ্ছেদটুকু প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং একই সঙ্গে আমি জাতির কাছে ও বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার কাছে ক্ষমা চাইছি।”
প্রথমা প্রকাশনী বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠার বিতর্কিত অংশটুকু বাদ দিয়ে পুনঃমুদ্রণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বইয়ের লেখক একে খন্দকার।
ওই বই প্রকাশের পর শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। বইটি নিষিদ্ধের দাবি ওঠে সংসদে, আদালতে হয় অভিযোগ।
কোনো মহলের প্ররোচনায় এ কে খন্দকার এই বই লিখেছেন বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। বিএনপি নেতারা বলেন, এই বইয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বক্তব্যের অসাড়তা প্রমাণিত হয়েছে।
সাড়ে চার বছরের নীরবতা ভেঙে এ কে খন্দকার বলেন, “আমার বয়স ৯০ বছর। আমার সমগ্র জীবনে করা কোনো ভুলের মধ্যে এটিকেই আমি একটি বড় ভুল বলে মনে করি।
গোধূলী বেলায় দাঁড়িয়ে পড়া সূর্যের মতো আমি আজ বিবেকের তাড়নায় দহন হয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মার কাছে ও জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।”
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বঙ্গবন্ধুকে ‘স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান’ উল্লেখ করে তার বর্ণাঢ্য জীবনের কথা তুলে ধরেন এ কে খন্দকার।
“জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে পরা একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার প্রতি কৃতজ্ঞ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমলে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। পরে এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে পরিকল্পনামন্ত্রীও হন তিনি।
এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে পাবনা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পাঁচ বছর শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও ২০১৪ সালের নির্বাচনে জায়গা হয়নি তার।
আই// এসএইচ/
আরও পড়ুন