ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে হলি আর্টিজান হামলার রায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৪৭, ২৭ নভেম্বর ২০১৯

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা (বহুল আলোচিত গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা) মামলায় ৭ আসামিকে (আট আসামি) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ আদেশ দেন। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রচার করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা, ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি, জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, দ্য গার্ডিয়ান, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আউটলুক ইন্ডিয়া, দ্য চায়না পোস্ট, স্ট্রেইট টাইমসসহ বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমের অনলাইন ভার্সনে গুরুত্বের সঙ্গে খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বাংলাদেশের একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষককে উদ্ধৃত করে এই রায়কে ‘একটি মাইলফলক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘এই রায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আইনগতভাবে তার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটালো।’

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ইসলামপন্থী উল্লেখ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি লিখেছে, ‘২০১৬ সালের ক্যাফে হামলায় সাত ইসলামপন্থীর মৃত্যুদণ্ড’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ঘটনায় বিচারাধীন ৮ জনের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় আইএসের পক্ষ থেকে দায় স্বীকার করা হলেও বাংলাদেশের দাবি, স্থানীয় একটি জঙ্গি সংগঠন ওই হামলা চালিয়েছে।

চীনের সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া লিখেছে, ‘২০১৬ সালের ক্যাফে হামলায় সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বাংলাদেশ’।

কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজর পত্রিকা লিখেছে, খাগড়াগড় চক্রী হাতকাটা নাসিরুল্লার মৃত্যুদণ্ড কাফে-হামলা মামলায়।

পত্রিকাটি আরও লিখেছে- দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ভারতের বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত সোহেল মেহফুজ ওরফে হাতকাটা নাসিরুল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন ঢাকার আদালত।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের শিরোনাম, বাংলাদেশ: ক্যাফে হামলার ঘটনায় ৭ ইসলামি জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার নিষিদ্ধ ঘোষিত নব্য জেএমবি (জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) নামের এক জঙ্গি সংগঠনের ৭ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা ২০১৬ সালে ঢাকার একটি ক্যাফেতে হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। অভিযুক্ত ৮ জনের মধ্যে একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হামলাটির পরিকল্পনা-অর্থায়ন ও বিস্ফোরক বানানোর অভিযোগ ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে আরেক ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রায় ঘোষণার পর দোষী সাব্যস্ত হওয়া আসামিরা আদালতেই ‘আল্লাহ আকবর’ বলে ওঠে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস জঙ্গি হামলায় ২২ জন দেশি-বিদেশি নাগরিক নিহত হন। আলোচিত এই ঘটনায় এসআই রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসি প্রায় দুই বছর তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আট জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। অভিযোগ গঠন করে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে শুরু হয় বিচারকাজ। 

আভিযান চলাকালে জঙ্গিদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গি।

বুধবারের রায়ে ‌মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসা‌মিরা হ‌লেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

এমএস/এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি