ভোর রাতেই পূর্ণ জামায়াতের সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী
প্রকাশিত : ০৮:৫৬, ১৯ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ০৯:১৩, ১৯ জুলাই ২০২৫

প্রথমবারের মতো রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ভোর রাতেই পূর্ণ হয়ে গেছে জামায়াতে মহাসমাবেশস্থল। সমাবেশ ঘিরে শুক্রবার রাত থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দলটির বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরা।
শনিবার সকাল ১০টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। তবে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে দুপুর ২টায়।
‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিতকরণ, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং মৌলিক সংস্কারের দাবিসহ সাত দফা দাবিতে এই জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশে অংশ নিতে সারা দেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ নেতা-কর্মীর উপস্থিতি আশা করছে দলটি।
শুক্রবার রাতে সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উদ্যানে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। অনেক নেতা-কর্মী ইতিমধ্যে মঞ্চের সামনে এসে পৌঁছেছেন। তাদের কেউ জামায়াতের লোগোসংবলিত টি-শার্ট পরেছেন, কারও মাথায় বাঁধা দলীয় ফিতা। অনেকে হাতে এনেছেন দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। মঞ্চের সামনে বিছানো ত্রিপলের ওপর বসে কিংবা শুয়ে সময় কাটাচ্ছেন তারা।
তবে ভোর রাতে সারা দেশ থেকে মানুষের স্রোত নামে রাজধানীতে। বাস থেকে নেমে ফজরের নামাজ আদায় করে সমাবেশস্থলে আসেন তারা। আবার অনেকে মাঠেই নামাজ আদায় করেন।
কুড়িগ্রাম সদর থেকে আসা আবদুল্লাহ আল-আমিন বলেন, ‘প্রথমবার জামায়াতের সমাবেশ এখানে হচ্ছে। সামনে জায়গা পেতেই আগেভাগে চলে এসেছি।’
গাজীপুর থেকে আসা সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘শনিবার ঢাকায় ঢোকা কঠিন হবে, তাই আগেই চলে এসেছি।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমার জেলা ঝালকাঠি থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী এসেছেন লঞ্চে। নির্দেশনা অনুযায়ী বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে এসেছেন। লঞ্চে কোনো হই-হুল্লোড় ছিল না। খাবার প্যাকেট নিয়ে ছিল না কোনো হট্টগোল।
তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে জানলাম প্রত্যেকে নিজ খরচে তাদের দলের সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় রওনা হয়েছেন- অর্থাৎ লঞ্চে একত্রে গেলেও প্রত্যেকে লঞ্চভাড়া নিজেরা বহন করছেন। তবে ঘুমানোর জায়গার কমতি ছিল। নিজে জেগে থেকে, বসে থেকে অন্য ভাইকে ঘুমানোর সুযোগ দিয়েছে। ইসলামি দলগুলোর সৌন্দর্য এখানেই।
কুমিল্লা থেকে আসা আহমদ ইবনে আহসান বলেন, আমরা গতরাতেই রওয়ানা করে এসেছি। ফজরের আগেই পৌঁছে গেছি। আলহামদুলিল্লাহ। নির্দেশনা মোতাবেক মহাসমাবেশ শেষ হওয়া পর্যন্ত থাকবো। ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা শুকনো খাবার ও পানি নিয়ে এসেছি। প্রত্যেকের ব্যাগে জায়নামাজ আছে। সবাই মিলে একসঙ্গে গাড়িতে এলেও নিজেরাই খরচ বহন করেছি, সংগঠন থেকে দিতে হয়নি। বরং আমাদের অনেকে স্বেচ্ছায় ১০ থেকে ২০ জনের খরচ বহন করেছেন।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে এসেছেন আবু সালেহ মো. মুসা। তিনি বলেন, আমরা গতকাল বিকেলেই রওয়ানা করেছি। ফজরে এসে পৌঁছেছি। আমাদের নির্দেশনা ছিল ফজরের নামাজের পরই যেন মাঠে থাকতে পারি। সেভাবে গাড়ি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে সবাই চলে এসেছে।
জামায়াতের জাতীয় মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, ‘সমাবেশে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের ঢল নামবে। নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জন্য ২০টি পয়েন্টে প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। ঢাকা শহরের বাইরের অংশগ্রহণকারীদের জন্য রাখা হয়েছে অন্তত ১৫টি পার্কিং পয়েন্ট।’
তিনি আরও জানান, হামদ-নাত পরিবেশনার পর মূল সমাবেশ শুরু হবে শনিবার দুপুর ২টায়।
এএইচ
আরও পড়ুন