ঢাকা, সোমবার   ০৬ মে ২০২৪

আইনের বেড়াজালে বন্দী স্বেচ্ছায় অঙ্গদান (ভিডিও)

শিউলি শবনম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আইনের বেড়াজালে বন্দী স্বেচ্ছায় অঙ্গদান প্রক্রিয়া। উচ্চ আদালতের রায়ের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও বাস্তবায়ন হয়নি নিকটাত্মীয় ছাড়া অন্য কারো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গ্রহণ বা ‘স্বেচ্ছা শুভাকাঙ্ক্ষী অঙ্গদান’ আইন। অথচ কিডনিদাতা সংকটেই দেশে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে অর্ধলাখ মানুষ। বিপুল সংখ্যক রোগীকে বাঁচাতে আইন সংশোধনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। 

দেশে প্রথম কিডনি সংযোজন শুরু হয় ১৯৮২ সালে। এরপর ৪০ বছরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে মাত্র আড়াই হাজার। কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, বছরে মোট কিডনির চাহিদা ৪০ হাজার। প্রতিস্থাপন করা হয় মাত্র দুইশ’। অভিন্ন চিত্র অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রেও। 

২০১৮ সালের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন অনুযায়ী জীবন রক্ষায় ২২ নিকটাত্মীয়ের বাইরে কারো কিডনি অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করার সুযোগ নেই। কিন্তু এ সংক্রান্ত একটি রিটে ২০১৯ সালে আদালত ‘শুভাকাঙ্ক্ষী অঙ্গদান’ প্রক্রিয়া চালু করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আইন ও বিধি সংশোধনের নির্দেশ দেন।  যাতে নিকট আত্মীয় না হয়েও স্বেচ্ছায় যে কেউ মুমূর্ষু রোগীর জন্য কিডনি বা অন্য কোনা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিতে পারেন।  

রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, “নিকটাত্মীয়ের বাইরেও বিশেষ পরিস্থিতিতে ইমোশন কারণে যে কেউ কিডনি ডোনেট করতে পারেন। বিশেষ পরিস্থিতিতে সেই নিকটাত্মীয় নাও থাকতে পারেন। বিশেষ পরিস্থিতিতে যাতে ডোনেট করা যায় সেভাবে করে আইনে পরিবর্তন আনতে বলা হয়েছে “

এতে দরিদ্র মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে উল্লেখ করে ‘শুভাকাঙক্ষী অঙ্গ সংযোজন’র বিরুদ্ধে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কেউ কেউ। তবে এর বিপক্ষ মতও রয়েছে।  

কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশিদ বলেন, “ইমোশনাল ডোনার চিহ্নিত করা যায় না। বাড়িতে কাজ করছেন তখন সেও হয়ে যায় আত্মীয়, পাড়া প্রতিবেশী একজন গরীব মানুষ সেও তখন আত্মীয় হয়ে যান। এই অবস্থায় ডোনারকে সঠিকভাবে পরীক্ষা করা না।”

বিএসএমএমইউ ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, “বিদ্যমান আইনের জন্য অনেক রোগী ডোনার রেডি করে ইমোশনাল ডোনার বলে বাইরে চলে যাচ্ছেন। যেহেতু আমাদের এখানে ইমোশনাল ডোনার আইনগতভাবে গৃহীত নয়। তখনই বেআইনী জিনিসগুলো হয়। ওপেন করে দিলে সুবিধা আছে, এই আইনের আওতায় ডোনাররা ঠিকই দিতে পারবেন।”

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের অনেক দেশেই স্বেচ্ছায় অঙ্গদান প্রক্রিয়ায় নতুন জীবন পাচ্ছে মানুষ। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বাণিজ্যিকীকরণ বা পাচার ঠেকানো সম্ভব।  

রায় বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা করার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। 

রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, “আমরা বেশ কয়েকবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপর নোটিশ জারি করেছি যে, আপনারা রায় অনুযায়ী কাজ শুরু করেন।”

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি