আজও বিক্ষোভে উত্তাল ভিকারুননিসা
প্রকাশিত : ১১:৫৯, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১২:০২, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে দ্বিতীয় দিনও বিক্ষোভে উত্তাল। বুধবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা স্কুলের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।
নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ‘শাসন করুন অপমান নয়,’‘কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আর কত শিক্ষার্থী প্রাণ দেবে,’‘ শিক্ষার্থীদের অপরাধের শাস্তি যদি টিসি হয়, তবে শিক্ষকদের অপরাধের শাস্তি কি হবে? এমন অনেক স্লোগান দিচ্ছে।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষকরা কখনো শিশুদের সমস্যা নিয়ে গার্ডিয়ানদের সঙ্গে কথা বলতে চায় না। এমনকি বাচ্চার কোন সমস্যা নিয়ে গেলে সমাধান করার চেষ্টা করে না।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিয়ে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ সময় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অধ্যক্ষ ও গভর্নিংবডির পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এটি একটি হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
গত রোববার পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫)। ফোনে নকল থাকার অভিযোগ তুলে তাকে পরীক্ষা থেকে বহিস্কার করা হয়। এর পর তার বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে তারা স্কুলে যান এবং মেয়ের হয়ে দফায় দফায় ক্ষমা চান। উপাধ্যক্ষের কক্ষ থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়। পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে তারা গেলে তিনিও তাদের অপমান করেন এবং স্কুল থেকে অরিত্রি অধিকারীকে ছাড়পত্র দেওয়ার হুমকি দেন।
নিজের সামনে বাবা-মায়ের এমন অপমান সইতে না পেরে ওই দিন দুপুরে শান্তিনগরের বাসায় ফিরে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার শিক্ষার্থী অভিভাবকদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে ভিকারুননিসা ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বিক্ষোভের মধ্যেই অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি কমিটি করেছে। পাশাপাশি হাইকোর্টও এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।
অরিত্রির মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে তার বাবা দিলীপ অধিকারী বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করেছেন। ৩০৫ ধারার এই মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতি শাখার প্রধান জিন্নাত আরা এবং অরিত্রির শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে আসামি করা হয়েছে।
টিআর/
আরও পড়ুন