আট কুকুরছানা হত্যায় মামলা, সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী গ্রেপ্তার
প্রকাশিত : ১১:০৪, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
পাবনার ঈশ্বরদীতে মা কুকুরের অগোচরে জীবন্ত আটটি কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি রহমান (৩৮)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর–৮।
থানার ওসি আ স ম আব্দুন নূর জানান, ‘প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯’-এর ৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে নিশি রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পৌর সদরের রহিমপুর গার্লস স্কুলের পাশের এক বাসার চারতলা থেকে তাকে আটক করা হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ‘‘ঘটনাটি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এমন অমানবিক ঘটনায় ছাড় নেই। মহাপরিচালকও মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন।’’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নকে সোমবারই গেজেটেড কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার বিকালে তারা বাসা খালি করেন।
নয়নকে ফোনে পাওয়া না গেলেও তার স্ত্রী নিশি রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বাচ্চাগুলো সিঁড়ির পাশে থাকত, ডিস্টার্ব করত। তাই বাজারের ব্যাগে রেখে সজিনার গাছের গোড়ায় রেখেছিলাম। পুকুরে কীভাবে পড়েছে জানি না। আমি নিজে ফেলিনি।’’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে ইউএনওর বাসভবনের পাশে থাকত কুকুর ‘টম’। এক সপ্তাহ আগে সে ৮টি বাচ্চা দেয়। সোমবার সকাল থেকে ছানাগুলো না পেয়ে টম ছুটোছুটি করতে থাকে। পরে জানা যায়, রাতের কোনো একসময় নয়ন দম্পতি ছানাগুলোকে বস্তাবন্দি করে উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে দেন। সোমবার সকালে উদ্ধার হয় ছানাগুলোর মরদেহ—পরে সেগুলো মাটি চাপা দেওয়া হয়।
বাসভবনের কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম জানান, নয়নকে জিজ্ঞেস করলে তিনি অজ্ঞতার অভিনয় করেন। তবে তার ছেলে বলে—‘আম্মু ছানাগুলোকে পুকুরে ফেলেছে।’ এরপর বস্তা ভাসতে দেখে খুলে দেখেন—আটটি ছানাই মৃত।
এদিকে, মা কুকুর ‘টম’ ছানাগুলো দেখে প্রচণ্ড আর্তনাদ করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মীরা তাকে চিকিৎসা দেন। মঙ্গলবারও তাকে উপজেলায় ছানাদের খুঁজতে ঘুরতে দেখা গেছে।
এএইচ
আরও পড়ুন










