ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

এমপিও’র দাবিতে অনশন: অর্ধশতাধিক অসুস্থ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১১, ২৮ জুন ২০১৮ | আপডেট: ১৬:৩৪, ২৮ জুন ২০১৮

ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন চতুর্থদিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। অনশনে এ পর্যন্ত ৬০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের মধ্যে অনশন স্থলেই ৩০ জনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার ও সাধারণ সম্পাদক ড. বিনয় ভূষণ রায়।


ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে সোমবার (২৫জুন) সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের উত্তর পাশের সড়কে শিক্ষকরা অনশন শুরু করেন। অনশনে থাকা শিক্ষকরা বলছেন, স্বীকৃতি পাওয়া সব কটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, আমরণ অনশনরত কোনো শিক্ষকের মৃত্যুর দু:সংবাদ শোনার আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি এমপিওভুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় আমরণ অনশন অব্যাহত থাকবে।


ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভুষণ রায় বলেন, আমরা বাধ্য হয়েই আমরণ অনশন করছি। এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্ষুধার জ্বালায় রাজপথে নেমেছে। দাবি আদায় ছাড়া শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যাবে না। তিনি বলেন, রাজপথে খোলা আকাশের নিচে রোদের মধ্যে ধুলাবালি, গাড়ির ধোঁয়া আর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এতে যদি কোনো শিক্ষকের প্রাণ যায় তার দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।


তিনি জানান, গত চারদিনের আমরণ অনশনে শিক্ষকদের প্রাই ৬০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ শিক্ষকরা কিডনি, ঠান্ডা জ্বর, শ্বাস কষ্টসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।অসুস্থদের মধ্যে ১০জনকে এরই মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।এতো অসুস্থতার মধ্যেও আমরা এখনও সরকারের কারো পক্ষ থেকে কোন আশ্বাস পায়নি।


ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০১০ খ্রিস্টাব্দের পর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়নি। গত বছরের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে এসব শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে টানা পাঁচদিন আমরণ অনশনের পর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান এমপিওভুক্তির আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের যে বাজেট বক্তৃতা দেন, সেখানে নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য না থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীরা গত ১০ জুন থেকে ফের রাজপথে নেমেছেন।


জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক কর্মচারী আছেন প্রায় ৫ লাখ। তাদের বেতন-ভাতা বাবদ মাসে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৯০০ কোটি টাকা। এর বাইরে স্বীকৃতি পাওয়া ননএমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে ৫ হাজার ২৪২টি। এগুলোতে শিক্ষক কর্মচারী আছেন ৭৫ থেকে ৮০ হাজার। স্বীকৃতির বাইরে আছে ২ হাজারেরও বেশি ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।


মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্রমতে, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হলে এবং ওই সব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করলে মাসে আরও প্রায় দেড়শ কোটি টাকা খরচ হবে। যদিও সরকারের পরিকল্পনা হলো হাজারখানেক প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা।
আরকে//

 

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি