কক্সবাজারের উপকূল থেকে মানুষকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে
প্রকাশিত : ২০:১০, ২৪ অক্টোবর ২০২২

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ঝুঁকিতে কক্সবাজার উপকূল থেকে আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৮,১৫৫ জন মানুষ এবং ২,৭৩৬টি গবাদি পশুকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'প্রয়োজনে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য নিকটবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।'
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার মধ্যরাতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। কক্সবাজার উপকূলকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কায় আছেন জেলার সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়া ও মহেশখালী এবং পেকুয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলার উপকূলীয় দেড় শতাধিক গ্রামের ১০ লাখ মানুষ। বেশ কয়েকটি উপজেলায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙা আছে।
জনগণের জানমাল রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরের কাজ চলমান। এখন পর্যন্ত বড় ধরণের কোন দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে যে কোন প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে (ফোন নম্বর: ০৩৪১- ৬২২২২, মোবাইল ফোন নম্বর: ০১৮৭২৬১৫১৩২) যোগাযোগ করার জন্য বলেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক জানান, সকলের সচেতনতা আমাদের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করবে। নিজে নিরাপদ থাকুন, অন্যকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে সহায়তা করুন।
এর আগে রোববার বিকেলে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জেলায় ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার কথা হয়। যেখানে ৬ লাখ ৫ হাজার ২৭৫ জন মানুষ আশ্র্রয় নিতে পারবেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোলা হয়েছে ৯টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০৪টি মেডিকেল টিম। এছাড়াও মজুদ আছে ৩২৩ মেট্র্রিক টন চাল, ৮ লাখ ২৫ হাজার নগদ টাকা ও এক হাজার ১৯৮ প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩৫০ কার্টুন ড্রাই কেক, ৪০০ কার্টুন ডাইজেস্টিভ বিস্কুট।
সভায় জেলা প্রশাসক মো. মানুনুর রশীদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ঝড়ের পূর্বেই মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। প্রত্যেক ইউনিয়নে মেডিকেল টিম প্রস্তুতকরণ, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও খাওয়ার পানি মজুদ রাখা, দুর্যোগকালীন ও ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাধ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে যে কোন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিকভাবে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক দল, কোস্টগার্ড সদস্য, নৌপুলিশ সদস্য, ২ হাজার ২০০ জন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক এবং ৮ হাজার ৬০০ জন সিপিপি সদস্য প্রস্তুত রয়েছে।
সাইক্লোন সেন্টারে সম্ভাব্য আশ্রয় গ্রহীতাদের জন্য শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নারী, পুরুষ, গর্ভবতী নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কেআই//
আরও পড়ুন