ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

কবি সৈয়দ আল ফারুকের ৬২তম জন্মদিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০৮, ১২ এপ্রিল ২০২০ | আপডেট: ১৫:০৭, ১২ এপ্রিল ২০২০

সৈয়দ আল ফারুক

সৈয়দ আল ফারুক

কবি-শিশুসাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক-ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আল ফারুকের ৬২তম জন্মদিন আজ। তিনি সত্তর দশকের অন্যতম প্রধান কবি। সমকালীন বাংলা কবিতায় সৈয়দ আল ফারুক এক ব্যতিক্রমী কন্ঠস্বর, অপরিহার্য নাম, অবিচ্ছেদ্য অংশ।

আধুনিক কবিতার সচেতন পাঠকমাত্রই তার একটি নতুন কবিতার জন্যে অপেক্ষা করেন নিয়মিত। বৈচিত্র-সন্ধানী সৈয়দ আল ফারুক তাই আদায় করে নিতে পেরেছেন কাব্য-পাঠকের আলাদা রকমের সমীহ। প্রথম কবিতা লেখা কৈশোরে উনিশ শ উনসত্তরে, সাহিত্য চর্চায় পুরোপুরি আত্মমগ্ন হয়েছেন সত্তর দশকের মাঝামাঝি। ১৯৮২ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘উড়োখুড়ো মন’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তিনি ব্যাপকভাবে পাঠকের সমাদর, আলোচকের প্রশংসা আয় করেন, চিহ্নিত হন সত্তর দশকের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে। ১৯টি কাব্যগ্রন্থ, ১৮টি ছোটদের বই নিয়ে মৌলিক ও সম্পাদিত গ্রন্থসংখ্যা ৪২টি।

উল্লেখযোগ্য কবিতার বই : তুমি খাপ-খোলা তলোয়ার, গুলশান ব্রিজের পাশে প্রকাশ্য রাস্তায়, স্ত্রীর পত্র পুরুষ হইতে সাবধান, এক মিনিট ভালোবাসা পালন করুন, শ্রেষ্ঠ কবিতা, আমি সিঁড়িটা ব্যবহার করতে চাইনা অথচ সিঁড়িটা আমাকে ব্যবহার করতে ইচ্ছুক, কবিতাসমগ্র ১, নির্বাচিত ১০০ কবিতা, সৈয়দ আল ফারুকের শ্রেষ্ঠ কবিতা এবং আমাদের কোথাও কোন শাখা নেই। উল্লেখযোগ্য ছোটদের বই : ছবির মধ্যে ছবি, বদলে যেতে যেতে, বাংলাদেশের পা দুটো, সবার ওপরে মুক্তিযোদ্ধা, সাহেবের মামা, একাই ১০০, সৈয়দ আল ফারুকের কিচ্ছু ভাল্লাগে না, একার কাছে একটা জাদুর পেনসিল আছে, আমার আমি, কিশোরসমগ্র ১, থ এবং আমি নিজের হাতে বাজাই নিজের ঢোল আমাদের শিশুকিশোর সাহিত্যের অনন্য সম্পদ। নব্বইয়ের সাড়া জাগানো সাপ্তাহিক আকর্ষণ সম্পাদক সৈয়দ আল ফারুক লন্ডন থেকে প্রকাশিত বিশ্বব্যাপী প্রচারিত আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন ‘কারি লাইফ’ এর এশিয়া এডিটর ছিলেন দীর্ঘদিন। ছিলেন বারিধারা সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সোসাইটি থেকে প্রকাশিত ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘বারিধারা’র সম্পাদক। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থাপনা-সদস্য, লেখক-সাংবাদিক শিল্পীদের প্রতিষ্ঠান মূলধারা আর ছোটদের লেখক-প্রকাশকসংগঠকদের প্রতিষ্ঠান শিশুসাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সৈয়দ আল ফারুক উইলস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এক্সপ্রেস ইন্সুরেন্স লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ কমিটি চেয়ারম্যান (প্রাক্তন বোর্ড চেয়ারম্যান), সিএপিএম ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এন্ড ফাইন্যান্স লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ কমিটি চেয়ারম্যান।

সৈয়দ আল ফারুক দেশের একজন নেতৃস্থানীয় বাণিজ্য-ব্যক্তিত্ব। সাহিত্য ও বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে তিনি ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে উড়েছেন, ঘুরেছেন বহুবার। পেয়েছেন পুরস্কার, হয়েছেন সংবর্ধিত। একমাত্র পুত্র লেখক-সাংবাদিক অরণ্য সৈয়দ যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে জার্নালিজম ও হিস্ট্রি এবং রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে অনার্সসহ মাস্টার্স শেষ করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও খেলাধুলা বিষয়ে গবেষণা ও লেখালেখিতে কর্মরত। ছায়াসঙ্গী সুশিক্ষিতা সুশ্রী স্ত্রী বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ও তথ্যচিত্র নির্মাতা নাহিদ নাজিয়াকে নিয়ে সংসার জীবনে টইটুম্বুর সুখী, মেষ রাশির জাতক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী সৈয়দ আল ফারুক নিঃসন্দেহে ঈর্ষণীয় শীর্ষে।

সব্যসাচী সৈয়দ আল ফারুক সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্যে পেয়েছেন ডাকসু সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮০), জেনারেশন পুরস্কার (১৯৯০), নাট্যসভা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯০), শিশু-উন্নয়ন পুরস্কার (১৯৯৭), শিশু একাডেমি অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৪০৪), কবি জীবনানন্দ দাশ সাহিত্য পুরস্কার (২০০৩), আইরিন আফসানা শিশুসাহিত্য পুরস্কার (২০০৩) নুরুল কাদের ফাউন্ডেশন পুরস্কার (২০০৩), সংহতি বিশেষ সম্মাননা পদক (২০০৮), গুলশান ক্লাব সম্মাননা (২০১৪) লক্ষীপুর জেলা সাহিত্য সংসদ পুরস্কার (২০১৪), কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় স্মৃতি পুরস্কার (২০১৪), আনন্দধারা পুরস্কার, ইউকে (২০১৫), বাঙালি সম্মাননা পুরস্কার, ইউকে (২০১৫), চয়ন সাহিত্য ক্লাব স্বর্ণপদক (২০১৫), ওয়াল্ড সেন্টার ফেয়ার ইউএসএ সম্মাননা (২০১৬) নিউ ইয়র্ক, মানবাধিকার শান্তি পদক (২০১৬), জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কার (২০১৬) পশ্চিমবঙ্গ, সময়ের শব্দ সম্মাননা (২০১৬) কলকাতা, চ্যানেল আই সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার (২০১৮)। এছাড়া বাণিজ্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি পেয়েছেন এশিয়া অ্যাওয়ার্ড : বেস্ট বিজনেস ভেনচার অ্যান্ড ইন্টেলেকচুয়াল অব দ্য ইয়ার (২০১২), বেটার বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন করপোরেট লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড ২০১৬।

এবার জন্মদিনে দুনিয়াব্যাপী লকডাউন, ছুটি ও ‘স্টে অ্যাট হোম’ থাকায় তিনি প্রথম জন্মদিনের মতোই পুরো সময় বাড়িতে থাকবেন এবং হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে দিনব্যাপী ভক্ত, পাঠক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন।

এদিকে কবি নিজের জন্মদিনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন- ‘আমি আগেও বলেছি, বছরের অন্য মাসগুলোয় আমি অপেক্ষা করি এপ্রিলের জন্যে। আর এপ্রিল শুরু হলে অপেক্ষা করি এগারো তারিখের জন্যে। কারণ এগারো শেষে যে বারো আসে, সেটা তো সবারই জানা। ১২ এপ্রিল আমার জন্মদিন। আর এই দিনটার প্রতিটি ঘন্টা, প্রতি মিনিট, প্রত্যেক সেকেন্ড বা মুহূর্ত আমি অনুভব করি, উপভোগ করি। কখন বারোটা বাজবে, আমার জন্মদিন শুরু হবে...। ছোটবেলায় ভাবতাম ছেলেমানুষী। এরপর বড়বেলায় এসেও দেখেছি ভাবনার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এমনকি এখন এই বুড়োবেলাতেও দেখি জন্মদিনের জন্যে অপেক্ষা, আগের মতো একই রয়ে গেছে। আমি ভাবতে থাকি কখন ঢাকায় বারোটা বাজবে, একই সময়ে লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, ব্রাক্ষ্মণবাডিয়া, টাঙাইলে? কলকাতা, দিল্লী, মুম্বাইয়ে তো আধা ঘন্টা পরে। লন্ডন, বার্মিংহামে ঢাকার পাঁচ ঘন্টা পরে বারোটা বাজে। প্যারিস, রোম, বার্লিন, লিসবনে কখন ১২ তারিখের শুরু। নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি, ওয়াশিংটন ডিসি, লস অ্যান্জেলেসে কখন বারোটা বাজে। সিডনি, মেলবোর্ন, অকল্যান্ড, টরেন্টো, অটোয়ায়? জন্মদিনে নানা রকম অনুষ্ঠানে আড্ডায় আমার সময় কাটে। বিশেষ করে সুবিধাবন্চিত শিশুদের সঙ্গে তো একটা দুপুর বা একটা বিকেল না কাটালেই নয়। এবার করোনার কারণে করণীয় কাজটা করা গেলো না। সব বন্ধ! আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা, যে যেখানেই আছেন সবার কাছে অনুরোধ : আপনারা সবাই বাড়িতে থাকুন। আর তাতেই করোনার বিস্তার রোধ বা নির্মূল করার কাজে সহায়তা করা হবে।’

এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি