ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

ঘুরে আসুন কালেঙ্গা জঙ্গলে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩৩, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৭:৫৬, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

প্রতিদিনের একই জীবনযাপনে বৈচিত্র আনতে ভ্রমণের কোনো বিকল্প নেই। ভ্রমণ জীবনে যে শুধু বৈচিত্র আনবে তা নয়, বরং আপনাকে মানসিকভাবে রাখবে প্রাণবন্ত। সামনে আছে পূজোর ছুটি। ঘুরে আসতে পারেন সিলেটের রেমা-কালেঙ্গা জঙ্গল থেকে।

যা দেখতে পাবেন

এই অভয়ারণ্যে আছে প্রায় ৬৩৮ প্রজাতির উদ্ভিদ, গাছপালা ও লতাপাতা। এখানকার উদ্ভিদগুলোর মধ্যে আওয়াল, সেগুন, কাঁকড়, নেউড়, হারগাজা, গন্ধরই, হরীতকী, বহেরা, জাম ডুমুর, কাঁঠাল, চামকাঁঠাল, কাউ, কদম, রাতা, চিকরাশি, চাপালিশ, নিম, বনমালা ইত্যাদি অন্যতম। এছাড়াও ৭ প্রজাতির উভচর প্রাণি, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ ও ১৬৭ প্রজাতির পাখি। এর উল্লেখযোগ্য হল ভিমরাজ, পাহাড়ি ময়না, কাও ধনেশ, বনমোরগ, ফোটা কান্টি সাতভারলা, শ্যামা, শালিক, শামুক খাওরি, টুনটুনি ইত্যাদি। এছাড়াও আছে প্রায় ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী। উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- কালো বন্যশূকর, সাদা বন্যশূকর, বানর, হনুমান, মুখপোড়া হনুমান, খরগোশ, ছোট হরিন, মেছোবাঘ, মেছোবিড়াল প্রভৃতি। ভাগ্য ভালো থাকলে অনেকের সাথেই দেখা হয়ে যেতে পারে আপনার। যতই জঙ্গলের গভীরে ঢুকবেন ততই নিজেকে অন্য এক সবুজ জগতে আবিষ্কার করবেন।

যেভাবে ঘুরে দেখবেন

এই অভয়ারণ্যে ঘুরে দেখতে আপনি তিনটি ট্রেইল বা পথ ব্যবহার করতে পারেন। ত্রিশ মিনিট, এক ঘণ্টা, তিন ঘণ্টার ট্রেইল বা পথের মধ্যে যেকোনোটি বেছে নিতে পারেন। কিছুদূর এগিয়ে গেলে দেখতে পাবেন রেমা কালেঙ্গায় শাহাদাতবরণকারী বীর উত্তম আবদুল মান্নান সাহেবের কবর। তিনি এখানে সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। গভীর বনে গিয়ে দেখা পেতে পারেন বন মোরগের ডিমের। অথবা নাকে লাগতে পারে ঝাঁজালো গন্ধ, যা হলো কোনো বিষাক্ত সাপের শ্বাস-প্রশ্বাস। দেখা পাবেন অসম্ভব সুন্দর একটি লেক। লেকের চারপাশ এতই প্রাকৃতিক যে মনেই হবে না এটা কৃত্রিম। বন্যপ্রাণীদের খাবার পানির চাহিদা মেটাতেই এটি তৈরি করা হয়েছে। লেকের পাশে রয়েছে একটা ওয়াচ টাওয়ার। ইচ্ছে করলে উঠে যেতে পারবেন টাওয়ারে। ওপর থেকে পুরো বনভূমি দেখার মজাই আলাদা। যত দূরে চোখ যাবে শুধুই প্রত্যক্ষ করবেন দুর্ভেদ্য জঙ্গল।

বনের আকার আয়তন

রেমা, কালেঙ্গা আর ছনবাড়ির এক হাজার ৭৯৫ হেক্টর জঙ্গল নিয়ে রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ১৯৮১ সালে এই রিজার্ভ ফরেস্টের এক হাজার ৯৫ হেক্টর এলাকাকে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৬ সালে বনের আরো কিছু জমি বৃদ্ধি করে মোট এক হাজার ৭৯৫ হেক্টর এলাকাকে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই বনে তিনটি আধিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। ত্রিপুরা, সাঁওতাল, উড়ং—এই তিন সম্প্রদায় মিলেমিশে এখানে বসবাস করছে যুগ যুগ ধরে।

যেভাবে যাবেন

রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্যে দু’ভাবে যাওয়া যায়। প্রথম উপায়ে ঢাকা থেকে সিলেটগামী বাস কিংবা ট্রেনে চড়ে যেতে হবে শায়েস্তাগঞ্জ। সেখান থেকে অটোরিকশা চেপে যেতে হবে কালেঙ্গা। বাসে শায়েস্তাগঞ্জের ভাড়া আড়াইশ থেকে চারশ টাকা। শায়েস্তাগঞ্জে বিরতি দেয় সিলেটগামী আন্তনগর ট্রেন উপবন এক্সপ্রেস। বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ১০টা মিনিটে ছাড়ে এই ট্রেন। ভাড়া ১৭০ থেকে ৬৭৩ টাকা। শায়েস্তাগঞ্জ থেকে কালেঙ্গার ট্যাক্সি ভাড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। কালেঙ্গা যাওয়ার আরেকটি পথ হলো— ঢাকা থেকে বাস কিংবা ট্রেনে শ্রীমঙ্গল। সেখান থেকে জিপে চড়ে কালেঙ্গা। জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এ পথ হওয়ায় অনেকেই এই পথটি ব্যবহার করেন। সবুজাবৃত বলের ভেতর দিয়ে জীপ নিয়ে যেতে আপনার ভালই লাগবে আশা করা যায়।

এসএইচ/ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি