ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪

চলচ্চিত্রে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৪৩, ২৪ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ১২:০৭, ২৫ জুলাই ২০১৭

দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে আরো এগিয়ে ‍নিতে সরকারিভাবে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই ক্ষেত্রটাতে (চলচ্চিত্র) যেন আমরা পিছিয়ে না থাকি। এই ক্ষেত্রটায়ও যেন আমরা আন্তর্জাতিক মানের গড়ে তুলতে পারি। এর জন্য, যা যা সহযোগিতা দরকার… আমি কথা দিচ্ছি, আমি করব।

সোমবার বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৫ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশের ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও কৃষ্টি সব কিছু ধারণ করে চলচ্চিত্র নির্মাণের পরামর্শ দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে চলচ্চিত্রেও নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও দক্ষতা অর্জন জরুরি। আন্তর্জাতিকভাবেও যেন আমাদের এই শিল্পটা যেন মর্যাদা অর্জন করতে পারে; সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে ২৫টি ক্যাটাগরিতে ৩১ জন শিল্পী ও কলাকুশলীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন অভিনেত্রী শাবানা ও কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসী রহমান।

এবার সেরা সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতেছে বাপজানের বায়োস্কোপ ও অনিল বাগচীর একদিন। সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন শাকিব খান ও মাহফুজ আহমেদ; সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন জয়া আহসান।

ভালো মানের চলচ্চিত্রের জন্য স্ক্রিপ্ট রাইটারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র নির্মাণে দক্ষ স্ক্রিপ্ট রাইটার দরকার। খুব দক্ষ স্ক্রিপ্ট রাইটার আমাদের প্রয়োজন, যার অভাব আমাদের আছে।

এজন্য সাহিত্যিক ও শিল্পীদের এগিয়ে আসার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, একটা চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে স্ক্রিপ্টটা কতটা দক্ষতার সঙ্গে নির্মাণ করা হল, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে, সেটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। একটা সিনেমা দেখার পর তার রেশটা নিয়ে যেন ঘরে ফেরা যায়।

সিনেমা হলে দর্শক ফেরানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, হলকে আধুনিক করে দিতে চাই, যেন সিনেমা হলে দর্শক ফিরে আসে।

চলচ্চিত্রে সেন্সর ব্যবস্থা পরিবর্তন করে সার্টিফিকেট ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইনের’ খসড়া প্রণয়নের কথাও বলেন তিনি।

এবারে পুরস্কারপ্রাপ্ত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আপনাদের কাজের স্বীকৃতি, যা আপনাদের ভবিষ্যৎ পথ চলায় অনুপ্রেরণা জোগাবে।

অনুষ্ঠানে শাবানা প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিলেও অসুস্থতার জন্য ফেরদৌসী রহমান আসতে না পারায় তার পুত্রবধূ পুরস্কার গ্রহণ করেন।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব না খাটানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার যখন দেওয়া হয়, তখন আমি আশা করব এখানে কেউ কারও প্রভাব খাটাতে চেষ্টা করবেন না। সত্যিকারের শিল্পীর যেন মূল্যায়ন হয়, সত্যিকারের কলাকুশলীর যেন মূল্যায়ন হয়।

২০১৫ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

আজীবন সম্মাননা- শাবানা ও ফেরদৌসী রহমান

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র - বাপজানের বায়োস্কোপ (প্রযোজক- মো.রিয়াজুল মওলা রিজু) এবং অনিল বাগচীর একদিন (প্রযোজক-আবুল খায়ের)।

শ্রেষ্ঠ অভিনেতা- শাকিব খান (চলচ্চিত্র-আরো ভালোবাসবো তোমায়) ও মাহফুজ আহমেদ (চলচ্চিত্র-জিরো ডিগ্রি)।

শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী- জয়া আহসান (চলচ্চিত্র-জিরো ডিগ্রি)।

পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা- গাজী রাকায়েত (চলচ্চিত্র- অনিল বাগচীর একদিন)।

পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী- তমা মির্জা (চলচ্চিত্র-নদীজন)।

খল চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা- ইরেশ যাকের (চলচ্চিত্র- ছুঁয়ে দিল মন)

শ্রেষ্ঠ পরিচালক- মো.রিয়াজুল মওলা রিজু (চলচ্চিত্র- বাপজানের বায়োস্কোপ) ও মোরশেদুল ইসলাম (চলচ্চিত্র- অনিল বাগচীর একদিন)।

শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র- চলচ্চিত্র ও প্রকাশণা অধিদপ্তর (একাত্তরের গণহত্যা ও বধ্যভূমি)।

শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী- যারা যারিব (চলচ্চিত্র- প্রার্থনা) ও প্রমিয়া রহমান (চলচ্চিত্র- প্রার্থনা)

শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক- সানী জুবায়ের (চলচ্চিত্র-অনিল বাগচীর একদিন)

শ্রেষ্ঠ গায়ক- সুবীর নন্দী (তোমারে ছাড়িতে বন্ধু, চলচ্চিত্র- মহুয়া সুন্দরী) ও এস আই টুটুল (উথাল পাতাল জোয়ার , চলচ্চিত্র- বাপজানের বায়োস্কোপ)।

শ্রেষ্ঠ গায়িকা- প্রিয়াংকা গোপ (আমার সুখ সে তো, চলচ্চিত্র-অনিল বাগচীর একদিন)। 

শ্রেষ্ঠ গীতিকার- আমিরুল ইসলাম (উথাল পাতাল জোয়ার, চলচ্চিত্র- বাপজানের বায়োস্কোপ)

শ্রেষ্ঠ সুরকার- এস আই টুটুল (উথাল পাতাল জোয়ার, চলচ্চিত্র-বাপজানের বায়োস্কোপ)।

শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার- মাসুম রেজা (বাপজানের বায়োস্কোপ)।

শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার- মাসুম রেজা (বাপজানের বায়োস্কোপ) ও রিয়াজুল মওলা রিজু (বাপজানের বায়োস্কোপ)।

শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা- হুমায়ূন আহমেদ (অনিল বাগচীর একদিন)।

হুমায়ূন আহমেদের পক্ষে তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন দুই ছেলেকে নিয়ে শেখ হাসিনার হাত থেকে প্রয়াত স্বামীর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন।

শ্রেষ্ঠ সম্পাদক- মেহেদী রনি (বাপজানের বায়োস্কোপ)।

শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক-সামুরাই মারুফ (জিরো ডিগ্রী)।

শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক- মাহফুজুর রহমান খান (পদ্ম পাতার জল)।

শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক- রতন কুমার পাল (জিরো ডিগ্রী)।

শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা- মুসকান সুমাইকা (পদ্ম পাতার জল)।

শ্রেষ্ঠ মেক আপম্যান- শফিক (জালালের গল্প)।

জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার বিশ্বাস, চলচ্চিত্র শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ এ নীতিমালার আওতায় উপকৃত হবেন।”

২০২১ সালের মধ্যে এফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহতম উল্লাহ ও তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে শাবানা তার অনুভূতির কথা জানান।

ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি