ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

মালদ্বীপ সংকট:

চীনা যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন, কি করবে ভারত?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:০৬, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গভীর রাজনৈতিক সংকটের মুখে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। সুপ্রিমকোর্টের আদেশ আর সরকারি ও বিরোধী দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে এই সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ মাসের গোড়ার দিকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে  সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বিরোধী দলের ৯ নেতাকে মুক্তির আদেশ দেয় সুপ্রিমকোর্ট। এই নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক সংকট।

মালদ্বীপের এই সংকটকে ভারত কীভাবে নেবে, সেই প্রশ্ন এখন  দেখা দিয়েছে। নাশিদ ও অন্যান্য বিরোধী নেতার অনুরোধ মেনে ভারতের কি মালদ্বীপে সামরিক হস্তক্ষেপ করা উচিত? নাকি ইয়ামিনকে থাকতে দিয়ে সেখানে চীনের প্রভাব বৃদ্ধিকে মেনে নেওয়া উচিত।  

এরইমধ্যে দেশটির সীমান্তে চীন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। তবে ঠিক কি কারণে চীন এই যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করেছে, সে বিষয়ে কিছুই বলেনি দেশটি। এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে নারাজ মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট  ইয়ামিনিও। জরুরি অবস্তার মধ্যে দেশটিতে কোন সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে ভারত কি ভূমিকা নেবে তাই এখন দেখার বিষয়। 

এদিকে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় প্রভাব বিস্তারে চীন যেভাবে কূটনৈতিকভাবে ভারতকে পেছনে ফেলেছে। মালদ্বীপের ক্ষেত্রেও এমনটা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে মালদ্বীপ ইস্যুতে ‘চীনকে ছাড় নয়’ এমন নীতিতে অটল রয়েছে ভারত।   

মালদ্বীপ চীনের কাছে দেনায় ডুবে আছে। এ মুহূর্তে নাশিদ ক্ষমতায় আসলেও তার পক্ষে চীনের কবল থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়। অন্যদিকে ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট নাশিদের কার্যালয় ইসলামপন্থীরা ঘিরে ফেললে নাশিদ ভারতের সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু চীনের সঙ্গে নাশিদের  ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় ভারত তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।

একসময় ভারতই মালদ্বীপের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল। কিন্তু সেখান থেকে সরে গিয়ে দেশটি চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে। মালদ্বীপের অধিবাসীরা মূলত ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভূত। এই দেশকে বহু আগে থেকেই ভারতীয় প্রভাববলয়ের অংশ বলে মনে করা হয়ে থাকে।

চীন অতি সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে। এ ছাড়া নাশিদের বক্তব্য অনুযায়ী, মালদ্বীপের ১৭টি দ্বীপে বিনিয়োগ করে প্রকারান্তরে সেগুলোর মালিক হয়ে গেছে চীন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই মুহূর্তে মালদ্বীপে ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কেননা এখন পর্যন্ত কোনো বৈধ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে হস্তক্ষেপের জন্য ডাকেনি। ভারত চাইলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মালদ্বীপ দখল করে ফেলতে পারে। কিন্তু সেখানে যদি ইসলামপন্থীদের সহায়তায় তৃতীয় কোনো শক্তি আসে, সেটি সামাল দেওয়া ভারতের জন্য কিছুটা দুরূহ হতে পারে।

এদিকে চীনও নেপালে ভারতের প্রভাব নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগছে। ইতোমধ্যে দেশটি মালদ্বীপ সীমান্তের কাছে যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করেছে। এতে ভারত যদি মালদ্বীপে কোন ধরণের হস্তক্ষেপ শুরু করে চীনও বসে থাকবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাই এ মুহূর্তে খুব সতর্কতার সঙ্গে খেলার গুটি চালতে হচ্ছে ভারতকে।

এছাড়াও প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের যদি পতন হয় এবং দেশটিতে একটি গণতান্ত্রিক সরকার নির্বাচিত হয়, তাহলেও মালদ্বীপে চীনের প্রভাব কমবে বলে মনে হয় না। তাই আগামী একমাসে মালদ্বীপ ইস্যুতে ভারতের পদক্ষেপ কি হবে, সেটা পুরোটাই নির্ভর করছে ইয়ামিনির পদত্যাগ বা সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর।

এমএইচ/ এমজে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি