ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু, কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগ

সাভার প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২১:৩৯, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২১:৫৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯

সাভারে অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় হাজির হয়ে ছুটি চাওয়ায় এক নারী শ্রমিককে গালিগালাজ করায় অপমান সহ্য করতে না পেরে ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছে এক নারী শ্রমিক। 

অভিযোগ উঠেছে প্রকাশ্যে সকল শ্রমিকের সামনে অপমান অপদস্ত করায় তা সইতে না পেরে অসুস্থ ওই নারী শ্রমিক কারখানাটির ৭তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন। এসময় ঘটনাস্থলেই ওই নারী শ্রমিক মারা গেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য লাশটি ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেন।

সোমবার দুপুরে সাভার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানার ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের কাজীপুর ফ্যাশন্স লিমিটেড কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই নারী শ্রমিকের নাম ফাহিমা খাতুন (২৮)। সে পাবনা জেলার সদর থানা এলাকার তারাবাড়িয়া গ্রামের ইদ্রিস মোল্লার ছেলে মিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। তৈরী পোশাক শ্রমিক স্বামীর সাথে কলমা এলাকার নুরুল হকের বাড়িতে থেকে গত তিন বছর ধরে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের কাজীপুর ফ্যাশন্স লিমিটেড কারখানার ৬ষ্ঠ তলার ফিনিশিং শাখায় অপারেটর হিসেবে কাজ করতো ফাহিমা খাতুন।

নিহতের প্রতিবেশি শরিফা বেগম বলেন, তৈরি পোশাক শ্রমিক ফাহিমা খাতুন ও মিরাজুল ইসলামের জাকির (৮) নামে একটি বাকপ্রতিবন্ধী ছেলে গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির কাছে থাকে। গত ১৫ দিন আগে প্রতিবন্ধী ছেলেটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ফাহিমা কারখানা থেকে তিন দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে তার ডান হাতে ১৮টি সেলাই দেয়া হয়। এ অবস্থাতেই ছুটির নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে পৌছে অসুস্থতার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন।

এসময় গালিগালাজ করে কর্তৃপক্ষ তাকে কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেন। এরপর তিনি নিজের চিকিৎসা করিয়ে গতকাল সোমবার পুনরায় কারখানায় প্রবেশ করে কাজে যোগদানের অনুমতি চান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে কাজে যোগদানের অনুমতি না দিয়ে সকলের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করলে অপমান সইতে না পেরে ৭তলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

নিহতের স্বামী মিরাজুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমি কারখানায় ছুটে যাই। কিন্তু সেখানে তাকে না পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে খোঁজ করি।

কারখানার ব্যবস্থাপক রেদুয়ানুল হক বলেন, ফাহিমা কয়েকদিন ছুটিতে ছিলেন। আমাদের নিয়ম হলো মেডিকেল থেকে রিপোর্ট নিয়ে এসে কাজে যোগ দিতে হবে। কিন্তু সে এটি না করে সরাসরি কাজে যোগ দিতে আসেন। পরে শুনতে পেরেছি সে ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি এবং তার মৃতদেহ সৎকার করার যাবতীয় ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।

শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি বলেন, নিহত পোশাক শ্রমিককে কারখানা কর্তৃপক্ষ গালিগালাজ করেছে বলে আমরাও শুনেছি। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি দুর্ঘটনা নয় বলে জানা গেছে, তাই এ বিষয়টি থানা পুলিশ দেখভাল করবেন।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। এঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেআই/এসি
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি