ঢাকা, সোমবার   ১৪ জুলাই ২০২৫

ডিএনএ টেস্টে পিতৃত্বের প্রমাণ

ছয় বছর পর সন্তানসহ স্ত্রীর মর্যাদা পেলেন প্রতিবন্ধী মুনজিলা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৭, ২৭ নভেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পিতৃত্ব প্রমাণিত হওয়ায় দীর্ঘ ছয় বছর পর বিয়ে করে সন্তানসহ স্ত্রীকে ঘরে তুলতে বাধ্য হন ধর্ষক ফজলুর রহমান। ফলে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে জয়ী হলেন বগুড়ার শেরপুরের বাক্প্রতিবন্ধী মুনজিলা খাতুন। গত শনিবার বিকেলে আদালতের নির্দেশে কুসুম্বী ইউনিয়নের উত্তর পেচুঁল গ্রামে সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এরপর মুনজিলা খাতুনকে স্ত্রীর মর্যাদা ও ছয় বছরের মেয়ে ফজিলা খাতুনকে কন্যার স্বীকৃতি দিয়ে ঘরে তুলে নিতে সম্মত হন ধর্ষক ফজলুর রহমান (৫৫)। ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘আমি লজ্জায় বিষয়টি গোপন করেছিলাম। এখন আদালতের নির্দেশ মেনে নিয়েছি। মুনজিলাকে স্ত্রীর মর্যাদা এবং সন্তানকে বাবার অধিকার দিয়েছি।

বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক আব্দুর রহিমের নির্দেশে বিয়ের অনুষ্ঠানে স্পেশাল এপিপি অ্যাডভোকেট তৃপ্তি বেগম, এপিপি অ্যাডভোকেট রেখা ও পরিদর্শক হিসেবে দৈনিক বাংলা বুলেটিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তারেক হাসান শেখ উপস্থিত থেকে বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। পরে মুনজিলা খাতুনকে ফজলুর রহমানের বাসায় তুলে দেওয়া হয়।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, ফজলুর রহমান স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে। রয়েছে স্টক ও দাদন ব্যবসা। ধর্ষিতা মুনজিলা খাতুনের পরিবারে বড় ভাই খলিলুর রহমান ছাড়া কেউ নেই। খলিলুর একটি দইয়ের কারখানার শ্রমিক। ফজলুর রহমানের বাড়ির পাশেই একটি ছাপড়া (বেড়া) ঘরে তারা থাকত। ঘরে জোর করে প্রবেশ করে মুনজিলা খাতুনকে ধর্ষণ করেন খলিলুর।

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল এপিপি অ্যাডভোকেট তৃপ্তি বেগম জানান, মা-বাবা হারা বাক্প্রতিবন্ধী মুনজিলা খাতুন ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ধর্ষিত হয়ে ২৬ নভেম্বর কন্যাসন্তান প্রসব করেন। ধর্ষিত হওয়ার পর ফেব্রুয়ারি মাসে শেরপুর থানায় প্রথমে ধর্ষণ মামলা করা হয়। প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হলে ২০১৩ সালের মাঝামাঝিতে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পরিবর্তন করে শুনানি শুরু করা হয়।

বগুড়া কারাগারের জেলার রফিকুল ইসলাম জানান, জেল পুলিশের একটি দল কঠোর গোপনীয়তায় তিনজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ২২ জুলাই ভিকটিম ও আসামির ডিএনএ টেস্ট করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষা শেষ করে ফের তাদের কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়। আর নির্দেশনা মোতাবেক ২০ দিন পর তাদের আদালতে হাজির করা হয়। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট তিন মাস পর আদালতের হাতে পৌঁছে। এরপর আদালতের নির্দেশে গত ১৯ নভেম্বর দেড় লাখ টাকা দেনমোহরে ফজলুর রহমানের সঙ্গে মুনজিলা খাতুনের বিয়ের কাবিননামা রেজিস্ট্রি করা হয়। অসহায় এই মেয়ের বিয়েতে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে পাঁচ শতাধিক লোকের খাবারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

 

টিআর/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি