ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

জনশূন্য দর্শনা চেকপোস্ট, বেকার কয়েকশ মানুষ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:৪৯, ৪ এপ্রিল ২০২০

করোনার থাবায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর চেকপোস্ট। শুনশান নীরবতা নেমে এসেছে এখানে। 

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জয়নগর সীমান্তে হাজার হাজার মানুষের পদভারে মুখরিত থাকত। কিন্তু, চলমান করোনা সংকটে তা জনমানবহীনে রূপ নিয়েছে। 

চেকপোস্টকে কেন্দ্র করে এখানে বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও তা বন্ধ রয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছেন ইজিবাইক ও ভ্যানচালকসহ কয়েকশ মানুষ। 

গত এক সপ্তাহ ধরে একজন ব্যক্তিও বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করেনি। চলতি মাসে সরকারের রাজস্ব আয় নেমে এসেছে শূন্যের কোঠায়। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ৫৩ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী বাংলাদেশ-ভারত আসা যাওয়া করেছিল। 

চেকপোস্টটি চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে দর্শনা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত। সপ্তাহের ৭ দিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এর কার্যক্রম।  

১৯৪৭ সালে চেকপোস্টটি স্থাপিত হয়। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় ১৯৭৮ সালে চালু হয়। এরপর থেকে এই চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের যোগাযোগ চলে আসছিল। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের হানায় স্থবির হয়ে পড়েছে আন্তঃদেশিয় যোগাযোগ। 

এই চেকপোস্ট দিয়ে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর,রাজশাহীসহ বিভিন্ন এলাকার পাসপোর্টধারীরা যাতায়াত করে থাকেন। 

এদিকে করোনার প্রভাবে গত ১৩ মার্চ থেকে এই চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে প্রবেশ সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে দেয় দেশটির সরকার। তবে যেসব বাংলাদেশি ভারতে ছিল তাদের আসার সুযোগ ছিল। কিন্তু ২২ মার্চ থেকে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী বাদে সবারই আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। যা আজ পর্যন্ত অব্যাহত আছে। 

আর এতে বেকার হয়ে পড়েছেন চেকপোস্টের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকশ মানুষ। ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও বিজিবি সদস্যরা একপ্রকার গল্প গুজব করেই সময় পার করছেন। 

চেকপোস্ট এলাকার ফুট ফরমায়েশ খাটা আবুল হোসেন জানান, ‘চেকপোস্টকে কেন্দ্র করে এখানে ছোট-বড় অর্ধশতাধিক দোকান রয়েছে। যাত্রীদের আনা নেয়ার জন্য পায়ে চালিত ১৫০টি ভ্যানগাড়ি, ৩০-৪০টি অটোবাইক চলাচল করে। গত ১৫ দিন ধরে আমরা একদম বেকার হয়ে পড়েছি। কবে যে ভাইরাস থেকে মুক্ত হবে দেশ।’

ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই রাশেদ সাংবাদিকদের জানান, ‘কোনও যাত্রী নেই। আমরা ইমিগ্রেশনের ১৬ জন পুলিশ সদস্য, কাস্টমস, বিজিবি ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা প্রতিদিন ডিউটি করি। ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছে ২৯ হাজার যাত্রী, এসেছে ২৪ হাজার। মার্চে চেকপোস্ট চালু থাকা পর্যন্ত ভারতে গেছে ৮ হাজার ও এসেছে ১৫ হাজার যাত্রী। যাত্রীশূন্য হয়ে পড়ায় রাজস্ব আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে অনেকে কাজ কাম করতো, তারাও বর্তমানে বেকার হয়ে পড়েছেন।’

এআই/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি