ঢাকা, শুক্রবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জাতীয় পুরস্কার দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল : সাশা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪৬, ১৭ এপ্রিল ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

বলিউডে তার ‘বিগ ব্রেক’ ছিল ‘দ্য হাম্মা সং’। আর এ বছরের সেরা প্লে-ব্যাকের জাতীয় পুরস্কার জিতে নিলেন সাশা তিরুপতি। পুরস্কার পাওয়ার পর তার অভিমত তুলে ধরা হয় ভারতীয় গণমাধ্যমে।

এই পুরস্কারটা আশা করেছিলেন?
একটা ইমোশনাল সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম ব্যক্তিগত জীবনে, যখন এই গানটার রেকর্ডিং হয়। গাওয়ার সময়ই জানতাম যে এটা একটা পুরস্কারের দাবি রাখে। মেলোডির জন্য। এ আর রহমানের জন্য। আমি নিজের সব আবেগ ঢেলে দিয়েছিলাম গানটায়। তবে জাতীয় পুরস্কার পেয়ে যাব, এটা আশা করিনি। এটা আরও দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল।

কানাডা থেকে এ দেশে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেন?
এ দেশে শিফট করেছিলাম মূলত এখানকার মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির কথা ভেবে। ছবিতে প্লে-ব্যাক করব সেটা একদম প্রথমে ভাবিনি। তবে পরবর্তীকালে যখন সুযোগটা এলো, তখন ভীষণভাবে চেয়েছিলাম যাতে এ আর রহমানের সঙ্গে কাজ করতে পারি।

এ আর রহমান কীভাবে খুঁজে পেলেন আপনাকে?
তিন বছর আগে কোক স্টুডিও করতে গিয়ে ওঁর সঙ্গে আলাপ। রহমান স্যার ওঁর কোয়্যারের জন্য অডিশন নিচ্ছিলেন। এখনও মনে আছে আমার গান শোনার পর রহমান স্যার বলেছিলেন, ‘সাশা কার নাম?’ নিজের পরিচয় দেওয়ার পর উনি বলেছিলেন, ‘তোমার গলার আওয়াজ একটা মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টের মতো। মধ্যপ্রাচ্যের বাদ্যযন্ত্র দুদুক, অনেকটা বাঁশির মতো।’ তার পরেই আমাকে ওঁর পরের ছবিতে প্লে-ব্যাকের সুযোগ দেন উনি। আমার কাছে ওটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ছিল!

তার আগেও তো বলিউডে প্লে-ব্যাক করেছেন?
হ্যাঁ। ‘বম বম বোলে’ আমার প্রথম হিন্দি ছবিতে প্লে-ব্যাক। ‘তারে জমিন পর’এর দর্শিল সাফারি ছিল সেই ছবিটায়। তারপর আরও বেশ কয়েকটা প্রজেক্টে কাজ করেছি। তবে শুরুটা আমার জন্যেও মসৃণ ছিল না।

কী রকম?
একটা সময় সবার মতো আমাকেও কম্পোজারদের দরজায় ঘুরতে হয়েছে নিজের সিডি নিয়ে। অনেককে অনুরোধ করতে হয়েছে একটা ব্রেক দেওয়ার জন্য। সেই লড়াইয়ের সময়টার মধ্যে দিয়ে আমিও গিয়েছি। আসল ব্যাপারটা কী জানেন, ঠিক সময়ে ঠিক লোকের সঙ্গে দেখা হওয়াটা খুব দরকার। শুরুর দিকে আমার শুধু ভুল মানুষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছিল। তাই অনেকটা সময় লেগে গিয়েছিল। তার পরেই রহমান স্যারের সঙ্গে আলাপ। ওঁর আশীর্বাদে সবকিছু ঠিকঠাক হতে শুরু করল তারপর।

দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি থেকে বলিউডে এসে কতটা পার্থক্য বুঝেছিলেন?
কিছুটা পার্থক্য তো ছিলই। তবে ক্রিয়েটিভিটি দু’জায়গাতেই রয়েছে। এটা ঠিক যে দক্ষিণে ট্রাডিশনাল মিউজিকের একটা আলাদা জায়গা রয়েছে। তবে মার্গসংগীতে শিক্ষিত হওয়া আর সেটা প্রয়োগ করার মধ্যে তফাত রয়েছে। যেমন, শঙ্কর মহাদেবন। উচ্চাঙ্গ সংগীতে অসাধারণ দখল ওঁর। আবার উনিই ‘বোল না হলকে হলকে’ কিংবা ‘কাল হো না হো’র মতো মিষ্টি মেলোডি উপহার দিয়েছেন। বলিউডেও এমন অনেক মিউজিশিয়ান আছেন, যাঁদের রাগসংগীতে অগাধ জ্ঞান। কিন্তু সব গানে তাঁরা যে সেটা ব্যবহার করছেন, এমন নয়।

কিন্তু এখন এমন অনেক গায়ক-সুরকার বলিউডে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, যাঁদের সেই অর্থে কোনও ‘মিউজিক্যাল বেস’ নেই। এই বিষয়টা নিয়ে কী মনে হয় আপনার?
আপনার যদি সাংগীতিক তালিম থাকে, তাহলে তার প্রতিফলন আপনার গানে থাকবেই। তবে এমনও অনেক মিউজিশিয়ান রয়েছেন, যাঁদের সেই অর্থে কোনও তালিম না থাকা সত্ত্বেও ভাল ভাল গান তৈরি করছেন। যেমন, আমাল মালিকের ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিকে ফর্ম্যাল ট্রেনিং নেই সেভাবে। কিন্তু ওঁর গানে কী দারুণ মেলোডি! লোকে পাগলের মতো শুনছে তো! তাই আমার মনে হয়, গায়কদের ফর্ম্যাল ট্রেনিং থাকতেই হবে এমন কোনও মানে নেই। যদি থাকে, তবে সেটা বাড়তি সুবিধা দেবে।

আপনার তো বিভিন্ন ঘরানায় তালিম রয়েছে...।
কানাডা থেকে এ দেশে শিফ্‌ট করার পরে প্রথমে আমি তালিম নিই কমলা বসুর কাছে, ইলাহাবাদে। ছ’-সাত বছর পর বারাণসীতে যাই গিরিজাদেবীর কাছে। বিভিন্ন ঘরানা থেকে শিখতে শিখতেই বড় হয়েছি। আর এখন শিখছি রহমান স্যারের থেকে। প্রচুর ট্যুর করেছি, শো করছি ওঁর সঙ্গে। প্রত্যেকবারই নতুন কিছু শিখছি।

‘হাম্মা হাম্মা’র রিমিক্স গাওয়ার পরেই মানুষ বেশি করে চিনল আপনাকে। পুরনো হিট গানকে নতুনভাবে পরিবেশন করার কারণ কি অরিজিন্যালিটির অভাব? কী মনে হয়?
ঠিক তা নয়। এটা একটা নতুন ট্রেন্ড, যেটা হিট হয়ে গিয়েছে। পুরনো গানের রিমিক্স করায় আমি কোনও দোষ দেখি না। কারণ এখনকার ছেলেমেয়েরা নিজে থেকে পুরনো গান তেমন শোনে না। সেগুলোই যদি নতুন করে ওদের সামনে প্রেজেন্ট করা যায়, তাহলে ক্ষতি কী? এর ফলে তাদের কাছে আসল গানটাও পৌঁছে যায়। হারিয়ে যাওয়া সুরগুলো এই প্রজন্ম নতুন করে ফিরে পাচ্ছে। আর ইদানীং প্রায় প্রত্যেক ছবিতে যেমন একটা করে রিমেক থাকছে, সঙ্গে অন্য কম্পোজিশনও তো থাকছে। নতুন গান তৈরি তো আর বন্ধ হয়ে যায়নি। আমার মনে হয় দু’টোই সুন্দর ব্যালান্স করে চলছে।

পুরনো গান, পুরনো সুর হারিয়ে যাচ্ছে বলছিলেন। এটা আটকানো যায় কীভাবে?
পুরোটাই বাড়ির পরিবেশের ওপর নির্ভর করে। বাড়িতে কী ধরনের গান শুনে ছোটরা বেড়ে উঠছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমার ছোটবেলাটা কানাডাতে কেটেছে, কিন্তু আমার কান তৈরি হয়েছে ভারতীয় সংগীত শুনেই। আসলে একটা সময়ের পর সব ধরনের গানবাজনাই শুনতাম। একজন টিনএজার কলেজে উঠে নিজের পছন্দমতো গানই শুনবে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে ভালো গান শোনার পরিবেশটা তৈরি করে দেওয়া জরুরি।

জাতীয় পুরস্কার তো পেয়ে গেলেন। এর পর কী?
অনেকগুলো ভাষায় গাইছি পর পর। নিজের কম্পোজিশন নিয়েও কাজ করছি। আশা করছি, এ বছরের শেষের দিকে একটা সিঙ্গল প্রকাশ করতে পারব।

তথ্যসূত্র: এবেলা।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি