ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৪ মে ২০২৪

ডিজিটাল ডিভাইস থেকে শিশুকে দূরে রাখুন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৫৩, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

বর্তমানে শিশুদের সিংহভাগ সময় প্রযুক্তি দখল করে নিয়েছে। এখন শিশুরা সাধারণত মোবাইল টেলিভিশন, স্মার্টফোন, ট্যাব, ইউটিবে সময় কাটান। এটা অনেকেই ভালোভাবে দেখেন। কিন্তু এই প্রযুক্তির কারণে শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখছেন না অনেকেই। প্রযুক্তির এসব পণ্য থেকে শিশুদের দূরে রাখার জন্য দেশে দেশে অভিভাবকরা উদ্যোগ নিচ্ছে। বিশেষ করে বহিবিশ্বের অনেক দেশেই স্কুলে মোবাইল ফোন ইতোমধ্যে নিষেদ্ধ করা হয়েছে। 

 প্রযুক্তিপণ্য থেকে শিশুদের দূরে রাখতে যা করতে পারেন-

১. দেড় বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর সামনে কোনো ডিভাইস আনবেন না। টিভি, স্মার্টফোন, ট্যাব, ইউটিউব চালিয়ে সন্তানকে খেতে অভ্যস্ত করবেন না।

২. দেড় থেকে দুবছর বয়সে শুধু শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম। এসময় আপনি অবশ্যই সঙ্গে থাকবেন। 

৩. দু থেকে পাঁচ বছর এবং টিনএজ বয়সীদের জন্যে দিনে মাত্র এক ঘণ্টা। তাও রাত ১১টার আগে। ১১টার পর শিশু যাতে কোনোভাবেই স্ক্রিনের সামনে না থাকে, তা নিশ্চিত করুন। সন্তানের রোল মডেল হতে নিজেও বিরত হোন এসব থেকে।

৪. ১৮ বছর হওয়ার আগে সন্তানকে স্মার্টফোন কিনে দেবেন না। ঘরে শিশু থাকলে স্মার্টটিভিকেও শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন। 

৫. স্কুলে ফোন নিষিদ্ধের পক্ষে গড়ে তুলুন সামাজিক সচেতনতা, যাতে আপনার সন্তান স্কুল পরিবেশেও থাকতে পারে ভার্চুয়াল ভাইরাসমুক্ত!

৬. আসক্ত হওয়ার মতো কোনো অবসর যেন তার না থাকে। সন্তানকে ঘরের কাজে সম্পৃক্ত করুন। খেলাধূলা, বইপড়া ও সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন।

৭. ইলেকট্রনিক সব ডিভাইস সে কী কাজে ব্যবহার করছে, তার দিকে নজর রাখুন। কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন বা প্যাড- যেটাই হোক, অপারেটিং সিস্টেমে এমন কোনো ফিচার অ্যাড করা যায় কি না, যা আপনার সন্তানের নিরাপদ ব্যবহারকে নিশ্চিত করবে, তা জানার চেষ্টা করুন।

৮. সম্ভব হলে শিশুবান্ধব ব্রাউজিংয়ের ফিচারগুলো চালু করুন। অর্থাৎ ইন্টারনেট ঘাঁটতে গিয়ে আপনার শিশু যাতে ক্ষতিকর বা বয়স অনুপযোগী কোনো সাইটে ঢুকে যেতে না পারে, সে ব্যবস্থা করুন। আইএসপি-র সহযোগিতাও নিতে পারেন। প্রয়োজনে রাতের বেলা সরিয়ে ফেলুন ওয়াইফাই রাউটার।

৯. সন্তান সারাক্ষণই রুমের দরজা বন্ধ করে রাখছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। একা থাকতে বা একা ভাবতে দেবেন না তাকে। ভাইবোনের সাথে শেয়ার করতে শেখান।

১০. নিজ নিজ ধর্মবিশ্বাস অনুসারে তাকে ধর্মীয় শিক্ষা দিন।

১১. পরিবারের সবাই মিলে নিয়মিত মেডিটেশন ও ইয়োগা চর্চা করুন, সেবা কাজে অংশ নিন। সন্তান ভার্চুয়াল ভাইরাস প্রতিহতের সামর্থ্য অর্জন করবে।   

১২. বকাঝকা নয়, সন্তানকে উদ্বুদ্ধ করুন। আপনিই হোন তার প্রথম ও সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু।

১৩. সন্তানকে সময় দিন। আপনি যদি সারাক্ষণ ফোন-টিভি নিয়ে পড়ে থাকেন, তাহলে এই ক্রমাগত অবহেলা সন্তানের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করে। ভবিষ্যতে তার মানসিক অসুস্থতা ঘটাতে পারে। তাই পরিবারের জন্যে বরাদ্দ সময়ে টিভি-কম্পিউটার-স্মার্টফোনসহ সব ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন।

১৪. সন্তান, মা-বাবা, ভাইবোন, ও আত্মীয়দের সাথে বাস্তব যোগাযোগ ও একাত্মতা বাড়ান।

১৫. যেসব সঙ্গ আসক্তির কানাগলিতে ঠেলে দেয়, তাদের পরিত্যাগ করুন। সপরিবারে ফাউন্ডেশনের সাদাকায়ন, আলোকায়ন ও আলোকিত পরিবার কার্যক্রমে অংশ নিন। প্রতি বৃহস্পতিবার পারিবারিক মেডিটেশন করুন।

১৬. কথা নয়, সন্তান অনুসরণ করে আপনার আচরণ। আপনি ভার্চুয়াল ভাইরাসে আসক্ত হলে সন্তানকে এ থেকে বিরত রাখা কঠিন। তাই আগে আপনি নিজে ফেসবুকসহ সবরকম সোশাল মিডিয়া বর্জন করুন, সন্তানও তখন বর্জনে উৎসাহিত হবে।


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি