ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

দেখে আসতে পারেন হাসন রাজার স্মৃতি চিহ্ন

সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ

প্রকাশিত : ১৫:৫৭, ১৭ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৬:০৫, ২১ ডিসেম্বর ২০২০

‘লোকে বলে বলেরে, ঘরবাড়ি ভালা না আমার
কী ঘর বানাইমু আমি, শূন্যের-ই মাঝার
ভালা করি ঘর বানাইয়া, কয় দিন থাকমু আর
অায়না দিয়া চাইয় দেখি, পাকনা চুল আমার।’
এ অমর সঙ্গীত রচয়িতার সম্পর্কে জানতে চাইলে যেতে পারেন সুনামগঞ্জে। আজ থেকে বহু বছর আগে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর ধারের এক রাজার জীবন আমূল পাল্টে দিয়েছিল স্বপ্ন-দর্শন। তার জীবন হয়ে উঠে সহজ সরল, মন হয়ে ওঠে প্রসারিত। ছেড়ে দেন রাজকীয় পোশাক। পড়তে শুরু করলেন সুফি পোশাক। সাধক রাজার স্মৃতিচিহ্ন এখনো অবশিষ্ট আছে সুনামেগঞ্জের আরফিন নগরে। সাদামাটা বাড়িতে তার শেষ স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে জাদুঘর। কল্পনায় আপনি যেতে পারবেন উনবিংশ শতকে। ছোটখাটো সংগ্রহ শালায় রাজার আয়েসি জীবন থেকে শুরু করে সাধক জীবন পর্যন্ত।

বাদক যন্ত্র থেকে রাজার জমিদারি ম্যাপ, রাজার খড়মসহ ব্যবহার্য জিনিসপত্র। ঘরের এবং ঘরের বাইরের সব সংগ্রহের পাশাপাশি অবস্থান পেয়েছে বিশিষ্টজনের সঙ্গে রাজার সাক্ষাৎ ও দর্শনার্থীদের ভ্রমণের বিশেষ কিছু ছবি। সিলেট শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই মিউজিয়ামের নাম রাজা’স মিউজিয়াম। এটা শহরের জিন্দাবাজার এলাকায় অবস্থিত।

সিলেট শহরের জিন্দাবাজারে হাসন রাজার বাসভবনটি বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে রাজা পরিবারের স্মৃতি সংরক্ষিত আছে। লোক সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের ওপর গবেষণা কার্যক্রমকে এই জাদুঘর অনুপ্রানিত করে থাকে।
জাদুঘরে দুটি গ্যালারি রয়েছে। প্রথম গ্যালারিটি প্রধান হলরুম। প্রধান হলরুমে চারটি শোকেসে হাসন রাজার ও তার পরিবারের ব্যবহৃত বিভিন্ন নিদর্শন সংরক্ষিত আছে।

দ্বিতীয় গ্রালারিতে হাসন রাজার জীবনের ওপর লেখা বই আছে। কবির জীবন সম্পর্কে জানতে বইগুলি পড়তে পারেন যে কেউ। হাসন রাজার ছদ্মনাম অহিদুর রেজা। তিনি একজন মরমী কবি এবং বাউল শিল্পী।
যেভাবে যাবেন-
ঢাকা থেকে সড়ক পথ, রেল পথ ও আকাশ পথেও যেতে পারের হাসন রাজার শহরে। যদি ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে সুনামগঞ্জ যান তাহলে প্রথমে সিলেট চলে যান তার পর বাসের জন্য যেতে হবে কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডে। আর বাকি রাস্তা গাড়িতে করে যেতে পারেন। চাইলে শাহজালাল (রহ.) মাজার গেটের পাশ থেকে যেতে পারবেন সুনামগঞ্জ শহরে। অথবা সরাসরি ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ। ব্যক্তিগত গাড়িতে যেতে চাইলেও যেতে পারেন। যাতায়াতের জন্য রাস্তা বেশ ভালো। বাসে গেলে সময় লাগবে প্রায় দুই ঘণ্টা, আর কারে যেতে লাগবে প্রায় ১ ঘণ্টার মতো। শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নামিয়ে দিলে রিকশা কিংবা বিদ্যুৎ চালিত অটোরিকশা মিলবে সহজেই। শহরের অন্য যেকোনো জায়গায় যেতেও মিলবে এসব যানবাহন।

ঢাকার মালিবাগ রেলগেট, রাজারবাগ, আরামবাগ, সায়েদাবাদ, পান্থপথ, সায়েদাবাদ থেকে সকাল ৬:৩০টা থেকে রাত ১১:৩০টা পর্যন্ত সিলেটের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়।
ঢাকা কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিনই ট্রেন যাতায়াত করে । ভ্রমণের জন্য রাতের ট্রেনে উঠাই ভালো। অথবা ঢাকা থেকে বিমান যোগেও যেতে পারেন। আর সিলেট থেকে রিকশা অথবা সিএনজি অটোরিকশায় চড়ে আপনি যেতে পারেন জাদুঘরে।
থাকার ব্যবস্থা-
সার্কিট হাউস বা সরকারি ডাকবাংলো ছাড়াও সিলেটের মাজার রোড, আম্বরখানা এবং জিন্দাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় এক হাজার টাকার মধ্যেই থাকার জন্য ভালোমানের হোটেল পেয়ে যাবেন।

খাবার সুবিধা-
যেই হোটেলে থাকবেন তার কাছাকাটি খবার হোটেল পেয়ে যাবেন আর জাদুঘরের কাছে কিছু দোকানে কফি, স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার বিক্রি করা হয়। তাজা মাছের স্বাদ নিয়ে খেতে চাইলে চলে যান নদীর পাড়ের হোটেলে। রিকশা অথবা অটোরিকশা যোগে অল্প সময়ের মধ্যেই যেতে পারেন নদীর পাড়ে।

সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ // এসএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি