ন্যাম সম্মেলনের সাধারণ বিতর্কে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৭:০৭, ২৬ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ১৮:২৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৮ তম ন্যাম সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে বাকু কংগ্রেস সেন্টারের প্ল্যানারি হলে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এবং সম্মেলনে যোগদানকারী অন্যান্য দেশের নেতৃবৃন্দ এদিন বিকেলে অনুষ্ঠেয় দু’দিনব্যাপী সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনেও যোগ দেবেন।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ বাকু কংগ্রেস সেন্টারে অনুষ্ঠেয় বাকু ঘোষণা গ্রহণ করবেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী আজ সম্মেলনের সাইড লাইনে বাকু কংগ্রেস সেন্টারের দ্বিপাক্ষিক বুথে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভ এবং নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শার্মা ওলীর সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হবেন বলে জানা গেছে।
পাশাপাশি সন্ধ্যায় হোটেল হিলটনে তার সম্মানে আজারবাইজানের দায়িত্বপ্রাপ্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মো. আল্লামা সিদ্দিকি আয়েজিত নৈশ ভোজেও যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
এর আগে গতকাল শুক্রবার বাকু কংগ্রেস সেন্টারে সমসাময়িক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত ও পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিশ্চিতে ‘বান্দুং নীতিমালা’সমুন্নত রাখা বিষয়ে এক সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের নিজভূমিতে স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়াই সংকটের একমাত্র সমাধান। এ সংকট কেবল বাংলাদেশে নয়, এ সংকট বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।
আর্থ-সামাজিক সাফল্য সত্ত্বেও বাংলাদেশ বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা সংকট এই দু’টি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি রাজনৈতিক সংকট এবং এর মূল গভীরভাবে মিয়ানমারে প্রোথিত। তাই এর সমাধানও মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই খুঁজতে হবে।’
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশে নয়, এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছি। এটির আমাদের দেশ এবং এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করছি।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটির বেশি বাংলাদেশী নাগরিককে ভারত আশ্রয় দেয়ার কথা স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যার পর বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ায় তিনি এবং তাঁর ছোটবোন শেখ রেহানাকে ছয় বছর নির্বাসনে কাটাতে হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দায় খুবই নগণ্য হওয়া সত্ত্বেও দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাবে প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোকে তাই অবশ্যই জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানাতে হবে।
এর আগে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য চারদিনের সরকারি সফরে গত বৃহস্পতিবার রাতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার স্থানীয় বাকু কংগ্রেস সেন্টারে ১২০টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের ফোরাম ন্যাম’র দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভ।
আই/আরকে
আরও পড়ুন