ঢাকা, বুধবার   ১৫ মে ২০২৪

পটুয়াখালীতে দুই প্রকৌশলীকে পেটালেন ঠিকাদার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:০৮, ৭ মার্চ ২০২২ | আপডেট: ১৯:১১, ৭ মার্চ ২০২২

পটুয়াখালীর দুমকিতে প্রথম শ্রেণির এক ঠিকাদারের হাতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের (এলজিইডি) দুই কর্মকর্তা মারধোরের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মারধোরের শিকার মোঃ নাজিম উদ্দীন দুমকী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরে (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী পদে এবং আবদুস সালাম একই দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত রয়েছে।

এঘটনায় পটুয়াখালী এলজিইডি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্য ক্ষোভ বিরাজ করছে। পটুয়াখালী মেসার্স পল্লী ট্রেডার্স এর মালিক গোলাম সরোয়ার বাদলের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম শাহাবুদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে এবিষয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার এবং সংশ্লিষ্ট উধ্বর্তন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

রোববার বেলা ১২টার দিকে দুমকী উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) দপ্তর এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় ভিকটিমের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ইউএনওকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

মারধোরের শিকার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সালাম বলেন, ‘২০১৬ সালে গোলাম সরোয়ার বাদল দুমকী উপজেলার পাঙ্গাশিয়ার ব্রীজ নির্মাণ করেন। কাজ শেষ হলেও র্নিমাণাধীন ব্রীজ নানা ত্রুটি থাকায় কাজের অনুকুলে অর্থ পরিশোধ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। কিন্তু ঠিকাদার বাদল রোববার আমার কাছে এসে শতভাগ বিল দাবি করে। তার দাবির বিপরীতে আমি আপত্তি দিয়ে বলি-উল্লেখিত প্রকল্পে যৌথ মেজরমেন্ট করে বাকি বিল পরিশোধ করা হবে। আপনি চাইলেই আমি বিল দিতে পারিনা। এতে ঠিকাদার বাদল রাগান্বিত হয়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করেন। পরে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীর কক্ষে গিয়েও একই কাণ্ড ঘটায়।’

মারধরের শিকার দুমকী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়রের সহচর গোলাম সরোয়ার বাদল ওরফে মেয়র বাদল রোববার দুপুর ১২টার দিকে প্রথমে আমার কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সালামের সঙ্গে পুরোনো একটি বিল নিয়ে বাকবিতণ্ডা ও মার-ধর করে আমার কক্ষে প্রবেশ করে। এসময় তিনি বিল নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমি পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের সাথে আলোচনা ও সমন্বয় করার পরামর্শ দেই। এসময় কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি চেয়ার ছুড়ে আমার বাম গালে থাপ্পড় মারেন। 

তিনি বলেন, চড়-থাপ্পড় দেয়ার সময় তিনি তার কোমরে থাকা পিস্তল দিয়ে আমাদের ভয়-ভীতি দেখায়। এসময় আমার ডাকা ডাকিতে উপজেলা পরিষদের অন্যান্য লোকজন এসে তাকে নিবৃত্ত করেন। তিনি চলে যাওয়ার পরপর আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছি। 

দুমকী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ হাওলাদার বলেন, ঘটনার সময় আমি অফিসে ছিলাম। মারধোরের ঘটনার পর এলজিইডির লোকজন আমাকে এসে বিষয়টি অবহিত করলেও আমি গিয়ে ঠিকাদারকে পায়নি। কিন্তু এঘটনাটি উপজেলা পরিষদের নয়, এটা জেলা অফিসের। তবুও অনাকাঙ্খিত ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি বিষয়টি সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।

দুমকী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল সালাম বলেন, এজাহার হয়েছে আমি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান ঘটনার সত্যতা স্বীকার  করে বলেন, আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।

অভিযুক্ত ঠিকাদার গোলাম সরোয়ার বাদল বলেন, পুরোনো একটি বিল নিয়ে এলজিইডি টালবাহানা শুরু করে। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে দুমকী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ মধ্যস্ততা করেন এবং বিল দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে দুমকী উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আঃ সালাম ১০ লাখ টাকা দাবি করলে আমি রোববার ধার-দেনা করে ৩ লাখ সত্তর হাজার টাকা সালামকে প্রদান করি। কিন্তু সালাম ওই টাকা হাতে নিয়ে বাকি টাকা দাবি করে বিল দিতে বেঁকে বসে। তখন আমি তার গায়ে হাত তুলতে বাধ্য হই। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কিছু হয়নি। 

১০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার বিষয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী আঃ সালাম বলেন, নিজের অপরাধ ঢাকার জন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ তিনি দিয়েছেন।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি