ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৫ মে ২০২৫

পরশুরামে ব্যক্তি উদ্যোগে রাবার বাগানে সফলতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫৭, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

পরশুরামে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা রাবার বাগান থেকে দীর্ঘ ৮ বছর পর বাণিজ্যিকভাবে রাবার কষ উৎপাদন শুরু হয়েছে। ফেনী জেলার একমাত্র এ রাবার বাগানের গাছে গতকাল শুক্রবার থেকে রাবার কষ সংগ্রহের জন্য‘বাটি’ (পাত্র) বসানো হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী জয়ন্তীনগর গ্রামে ২০১০ সালে হাজী মো. মোস্তফার মালিকানাধীন প্রায় ২৫ একর জায়গায় ৮ হাজার রাবার চারা রোপন করা হয়। পরিকল্পিতভাবে লাগানো সারি সারি রাবার গাছের এ বাগান দীর্ঘ ৮ বছর পরিচর্যার পর ২ হাজার গাছে রাবার কষ সংগ্রহের জন্য বাটি বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব গাছেই ‘কষ’ সংগ্রহের জন্য বাটি বসানো হবে।

বাগানের সত্ত্বাধিকারী হাজী মো: মোস্তফা জানান, সাধারণত রাবার গাছ রোপনের পর ৬ বছর পর্যন্ত পরিচর্যা করলে ৭ বছর থেকেই রাবার কষ উৎপাদন শুরু হয়। রাবার গাছ উৎপাদন উপযোগি হওয়ার পর থেকে ২৮ বছর পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্নভাবে রাবার ‘কষ’ দিয়ে থাকে। রাবার গাছের বয়স ৩৫ বছর হলে এর অর্থনৈতিক জীবনচক্র হারিয়ে যায়।

গাছ পুর্ণাঙ্গ উপযোগী না হওয়ায় আমার বাগান থেকে ৮ বছর পরে বানিজ্যিকভাবে রাবার কষ উৎপাদন শুরু হল। বিশেষ পদ্ধতিতে গাছ থেকে রাবার কষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। গাছের গোড়া থেকে ৭০/৭৫ সে.মি উপরে গাছের চারদিকে এক মিটার পরিমাণ কাটা হয়। কাটা অংশের নিচে একটি মাটির তৈরি বাটি বসিয়ে দেয়া হয়। সে বাটিতে গাছ থেকে গড়িয়ে পড়ে রাবার কষ। এ রাবার বাগান থেকে গড়ে ২৫শ থেকে ৩ হাজার লিটার রাবার কষ বিক্রি সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি। একটি রাবার গাছ থেকে দৈনিক প্রায় ৫শ গ্রাম রাবার পাওয়া যাবে। বাজার অনুযায়ী প্রতি লিটার রাবার ১শ ৫০ টাকা থেকে ২শ টাকায় বিক্রি করা যাবে। রাবার কষ সংগ্রহের জন্য বেশ কিছু শ্রমিকও নিয়োগ দেয়া হয়েছে এ বাগানে।

রাবার উৎপাদন ছাড়াও বাগানটি পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। সারিবদ্ধ গাছ, সবুজের সমারোহ, বন্য প্রাণীর আশ্রম, রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ দেখতে অনেক দর্শনার্থী ভীড় জমান রাবার বাগানে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখবে ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা এ রাবার বাগান।

মির্জানগর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টু জানান, চট্টগ্রামে কয়েকটি কোম্পানির সাথে কথা হয়েছে, তারা আমাদের বাগান থেকে রাবার কিনে নেবেন। পারিবারিকভাবে আমরা এ রাবার বাগান করার পর এটি একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, রাবার একটি লাভজনক কৃষিভিত্তিক শিল্প। দেশের পাবর্ত্য এলাকাগুলোতে রাবার বাগান করে অনেকেই নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন। কিন্তুু অন্যান্য জেলায় এটি তেমন দেখা যায়না। ফেনীতে আর কোথায়ও রাবার বাগান নেই। সীমান্তবর্তী এলাকা জয়ন্তীনগর গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে এটি গড়ে ওঠায় এ এলাকায় বাগান তৈরীর সম্ভাব্যতা প্রমাণ করেছে। উদ্যোক্তারা চাইলে কৃষি বিভাগ থেকে রাবার বাগানে সব ধরণের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়া হবে।

এনইউকে/ এমজে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি