ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

পায়েল হত্যা মামলার তিন খুনীর জামিন বাতিল

প্রকাশিত : ১৯:৫৬, ২০ মার্চ ২০১৯

চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর পায়েল হত্যা মামলার তিন আসামি হানিফ পরিবহনের গাড়ি চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। আসামিরা ভুয়া জিম্মাদার দেখিয়ে আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। এ ঘটনা আদালতের সঙ্গে প্রতারণার দায়ে আসামিদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাহমিদা আফসানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কাছে আদেশের কপি প্রেরণ করা হয়েছে।

আগামী ২৭ মার্চ মামলার চার্জগঠনের জন্য পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেছে আদালত। বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. আবদুল হালিম এর আদালত এসব আদেশ দেন।

এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল পিপি অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান বলেন, তিন আসামি ট্রাইব্যুনালে এসে ভুয়া জিম্মাদার দাখিল করে জামিন নেন। বিষয়টি বুধবার আদালতের নজরে আনা হলে ট্রাইব্যুনাল আদালতের সঙ্গে প্রতারণার ঘটনায় তাদের জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে আসামিদের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনজীবী সমিতির কাছে আদেশের কপি পাঠায় ট্রাইব্যুনাল।

ভুয়া জিম্মাদার প্রসঙ্গে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান বলেন, আদালতের আদেশ পেলে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ মার্চ আসামিরা হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে স্থানীয় ২ জন ব্যক্তির জিম্মায় ২০ হাজার টাকা বন্ডে জামিননামা দাখিল করেন। আদালত তা গ্রহণ করে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। দুই জিম্মাদারের মধ্যে ভোটার আইডি নম্বর ১৯৯১২৬৯৩৬২২০০০২৮৮ শিউলি বেগম। কিন্তু তার ভোটার আইডিতে দেখা গেছে একজন পুরুষের ছবি। এটি সন্দেহ হয় আদালতের।

ট্রাইব্যুনাল এ ঘটনাকে আদালতের সঙ্গে  প্রতারণা করা হয়েছে মর্মে আদেশ দেন। আসামিদের সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে আসামি চালক জামাল হোসেন, সুপারভাইজার মো. জনি ও হেলপার মো. ফয়সাল হোসেনের জামিন বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা  জারি করেন।

এ ঘটনায় আসামিদের আইনজীবী ফাহমিদা আফসানার বিরুদ্ধে এমন ঘটনায় কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা ট্রাইব্যুনালকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদককে অনুরোধ করে আদালত।

 

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২১ জুলাই রাতে দুই বন্ধুর সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওনা হওয়ার পর নিখোঁজ হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ এর শিক্ষার্থী মো. সাইদুর রহমান পায়েল। নিখোঁজের একদিন পর ২২ জুলাই মুন্সিগঞ্জ উপজেলার ভাটেরচর সেতুর নিচের খাল থেকে পায়েলের লাশ উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানা পুলিশ। এরপর হানিফ পরিবহনের ওই বাসের সুপারভাইজার জনিকে ঢাকার মতিঝিল এবং চালক জামাল হোসেন ও তার সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আরামবাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়।

আদালতে তাদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গজারিয়া এলাকায় গাড়ি যানজটে পড়ায় প্রসাব করার কথা বলে বাস থেকে নেমেছিলেন পায়েল। বাস চলতে শুরু করলে সে দৌড়ে এসে ওঠার সময় দরজার সঙ্গে ধাক্কা লেগে সংজ্ঞা হারায়। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার বদলে তার মুখ থেতলে দিয়ে দায় এড়াতে ভাটেরচর সেতু থেকে নিচের খালে ফেলে বাস নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন আসামিরা। গজারিয়া থানার পুলিশ ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর তিন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ মামলাটি চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। প্রজ্ঞাপনটি ১৬ জানুয়ারি পায় পায়েলের পরিবার। চট্টগ্রামে বিচার শুরু হয় ১৩ মার্চ।

কেআই/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি