ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪

পেনশনের আওতায় আসছেন বেতারের নিজস্ব শিল্পীরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৫১, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও বেতার শিল্পীদের সরকারি চাকরির আওতায় আনা আসলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে পেনশনের আওতায় আনা হচ্ছে বাংলাদেশ বেতারের নিজস্ব শিল্পী-কলাকুশলীদের। এই শিল্পীদের পেনশনের আওতায় নিতে নতুন পদ সৃষ্টি করে রাজস্ব খাতে ২৯৫ জন শিল্পীকে আত্তীকরণ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।


সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই উপমহাদেশে প্রথম ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে বেতারকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। শুরুতে বেতারকেন্দ্রের অফিসার, কর্মচারী ছাড়াও সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংগীতশিল্পী, বাদ্যযন্ত্র, নাটক, উপস্থাপনা, সংবাদ পাঠকসহ বিভিন্ন শিল্পীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রথা চালু করা হয়। পরবর্তীতে অফিসার ও কর্মচারীর পদ রাজস্ব খাতে নেওয়া হলেও নানা জটিলতায় শিল্পী-কলাকুশলীরা সরকারি চাকরির মর্যাদা পাননি।

১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ বেতারে কর্মরত নিজস্ব শিল্পীরা জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে তাদের চাকরি স্থায়ী করার অনুরোধ জানান। এরপর ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এ বিষয়ে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি বিভিন্ন সুপারিশ করলেও আইনি জটিলতার কারণে বেতার শিল্পী ও কুশলীদের চাকরি সরকারি করা সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারের নিজস্ব শিল্পীরা জাতীয় বেতন স্কেলের আটটি নির্ধারিত গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন।

এরপর ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এলে ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বেতারের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে হীরকজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বেতারের নিজস্ব শিল্পীদের চাকরি পেনশনের আওতায় আনা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, শিল্পীদের পেনশনের আওতায় নিতে ২৯৫টি পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তথ্য মন্ত্রণালয় শিল্পীদের আগের শিক্ষাগত যোগ্যতায় যোগদানের তারিখ থেকে বিদ্যমান বেতন স্কেলে আত্তীকরণ করতে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন চাওয়া হয়। এরপর ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ থেকে আত্তীকরণের অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর বাংলাদেশ বেতারের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯৫টি পদ সৃষ্টির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ শাখা ২৯৫টি পদ পেনশনের আওতায় নিতে সম্মতি দেয়।

এবিষয় জানতে চাইলে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক গত ৬ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠান। সরকারের প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির গত ১৮ ডিসেম্বরের সভায় প্রস্তাবটি উত্থাপন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সভায় কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় বিষয়টি এই কমিটির এখতিয়ারভুক্ত নয়, তাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে নিয়ম-কানুন মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।

এব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উপসচিব মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন,‌‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আত্তীকরণ করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আত্তীকরণের আওতায় নেওয়া শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন শিল্পী, সংগীত প্রযোজক, সেতার বাদক, গিটার বাদক, এজ্রাজ বাদক, তানপুরা বাদক, অর্গান/কীবোর্ড বাদক, তবলা বাদক, বাঁশি বাদক, ক্লারিওনেট বাদক, দোতারা বাদক, একোর্ডিয়ান বাদক, কঙ্গো/বঙ্গো বাদক, পারকেশন বাদক, ম্যান্ডেলিন বাদক, ভাইব্রোফোন বাদক, রাবার বাদক, সারেঙ্গী বাদক, নাট্য প্রযোজক, উপস্থাপক, ক্বারি, পাল্ডুলিপি লেখক, প্রযোজনা সহকারী, মুখ্য সংবাদ পাঠক, বাংলা সংবাদ পাঠক, অনুবাদক, টেপ-রেকর্ড লাইব্রেরিয়ান, অনুলিপিকার ও সংগীত সংকলক।


টিআর/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি