ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

বউয়ের টাকায় রেজাউল, শাহাদাতকে চালাবেন বোনেরা!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:২১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রেজাউল করিম ও ডা. শাহাদাৎ

রেজাউল করিম ও ডা. শাহাদাৎ

রাজধানীর দুই সিটির নির্বাচন শেষ, এবার পালা বাণিজ্যিক রাজধানীর চট্টগ্রামের। আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী রেজাউল করিম। যার নির্বাচনী খরচের একটি বড় অংশ দেবেন তার স্ত্রী ও ভাইয়েরা। অন্যদিকে, বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ভোট করবেন বোনদের টাকায়।

এ দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে জানা গেছে এমনই রহস্যময় তথ্য। আগামী ২৯ মার্চ চসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারই প্রথম চট্টগ্রামের সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে।

হলফনামা থেকে আরও জানা যায়, নিজের ব্যবসা থেকে এক লাখ টাকা খরচ করবেন রেজাউল করিম। পাশাপাশি স্ত্রী পাঁচ লাখ ও ভাইদের মধ্যে একজন সাড়ে তিন লাখ টাকা দেবেন। এছাড়া ওপর দুই ভাইয়ের কাছ থেকে পাঁচ লাখ করে মোট ১০ লাখ টাকা ধার করে ভোটের জন্য খরচ করবেন তিনি।

পেশায় ব্যবসায়ী ৬৭ বছর বয়সী রেজাউল নগরীর চান্দগাঁও থানার বহদ্দার বাড়ির সন্তান। এখনও বসবাস করেন পৈতৃক নিবাসেই। তার নামে কোনও ঋণ নেই। স্ত্রীর নামে অকৃষি জমি আছে দুই গণ্ডা দুই কড়া। উত্তরাধিকারসূত্রে এক লাখ টাকা মূল্যমানের নির্মিত ঘর পেয়েছেন রেজাউল।

রেজাউলের নিজের নামে স্থাবর সম্পদের মধ্যে চারটি অ্যাপার্টমেন্টের বর্তমান মূল্যমান এক কোটি ৯ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ টাকা। তার কাছে নগদ আছে এক লাখ টাকা, স্ত্রীর কাছে আছে তিন লাখ ৫১ হাজার ৪০৯ টাকা। বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে রেজাউলের বার্ষিক আয় চার লাখ ১৪ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে আয় তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা আর ফার্মের শেয়ার থেকে আয় দুই লাখ এক হাজার টাকা।

পাশাপাশি রেজাউলের নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা সাত লাখ আট হাজার ৫৩৯ টাকা। আর স্ত্রীর নামে ২০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ডসহ জমা আছে ৩২ লাখ ২৭ হাজার ৯০ টাকা। এছাড়া চার লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেটকারের মালিক রেজাউল।

তার ব্যবসায়িক মূলধনের মধ্যে আছে নিজ নামে দুই লাখ টাকা। আর মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামের সরবরাহকারী ফার্মের মূলধন ১০ লাখ ছয় হাজার টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামে ব্যবসায়িক মূলধন দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা। স্ত্রীর মেসার্স চৌধুরী ইলেকট্রনিক্স নামের একটি ফার্মের মূলধন দুই লাখ ৫১ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, বাকলিয়া ডিসি রোডের স্থায়ী বাসিন্দা ৫৪ বছর বয়সী ডা. শাহাদাত এখন বসবাস করেন নগরীর বাদশা মিয়া সড়কের একটি ফ্ল্যাটে। নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য নিজের আয় থেকে ২০ লাখ টাকা খরচ করবেন। আর দুই বোনের কাছ থেকে ঋণ করবেন পাঁচ লাখ করে মোট ১০ লাখ টাকা। 

রেজাউল ঋণমুক্ত হলেও ডা. শাহাদাত একজন ঋণ খেলাপি। উত্তরা ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের কাছে তিন কোটি ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঋণ আছেন তিনি। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের কাছেও ঋণ আছে ২৯ লাখ ৮১ হাজার ১৩২ টাকা এবং অন্যান্য ঋণ দুই লাখ ৪৬ হাজার ৩১৩ টাকা।

শাহাদাত নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার দ্য ট্রিটমেন্ট সেন্টার নামের হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক মূলধন ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৬০০ টাকা। তার টয়োটা গাড়ির মূল্য ১১ লাখ ৮০ হাজার আর পুরনো একটি জিপের মূল্য ২৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।

ডা. শাহাদাতের মোট বার্ষিক আয় ২০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাড়ি ভাড়া বাবদ আসে তিন লাখ ৫৩ হাজার ২৫ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষকতা ও পরামর্শক হিসেবে পান ১৭ লাখ ২১ হাজার টাকা। তার ১৫ লাখ টাকার পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৭ টাকা। বন্ড ও স্টক এক্সচেঞ্জে আছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৫০ টাকা।

শাহাদাতের মালিকানাধীন দুটি অকৃষি জমির মূল্য ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। একটি ৮ তলা আবাসিক ভবনের আট ভাগের একাংশের তিনি মালিক তিনি, যার মূল্য ৬৭ লখ ৮৬ হাজার টাকা। আর নিজের মালিকানাধীন একটি অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ৩৫ লাখ টাকা।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি