‘ভারতের সহায়তা ছাড়া শত বছরেও বাংলাদেশকে স্বাধীন করা সম্ভব হত না’
প্রকাশিত : ১৭:৩৪, ১০ নভেম্বর ২০২২

ভারতীয় বাহিনীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছাড়া শত বছরেও স্বাধীন করা সম্ভব হত না বাংলাদেশকে। এমনই অভিমত পোষণ করেছেন পটুয়াখালীর পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ।
তাঁর মতে, ভারতের বীর সৈনিকরা সরাসরি পাকিস্তানের বাহিনীর বিরুদ্ধে আকাশ, নৌ ও স্থল পথে লড়াই না করলে শত বছরেও হানাদারদের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা সম্ভব হত না।
বহুভাষী সংবাদ সংস্থা হিন্দুস্থান সমাচার-এর সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন পটুয়াখালীর পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের অবদানের প্রকৃত ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরতে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ পর্যন্ত ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলি মানুষের সামনে তুলে ধরতে বিভিন্ন চিত্রকলা ও ভাস্কর্য স্থাপনের মাধ্যমে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দুর্লভ কিছু চিত্রকলা ও ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন স্থানে।
এ সবের মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আঙ্গুল উঁচিয়ে ভাষণ দেওয়ার ভাস্কর্য, সুবিশাল পাক হানাদারদের আত্মসমর্পণের চিত্রকলা প্রভৃতি।
কেন এই দুর্লভ ভাস্কর্য ও চিত্রকলা স্থাপন করা হয়েছে, এ বিষয়ে হিন্দুস্থান সমাচার-এর প্রশ্নে মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে সৃষ্টির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর থেকে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত চক্র ধর্ম প্রচারের নামে স্বাধীনতা ইতিহাস মুছে ফেলার জন্য নানা অপপ্রচার চালিয়ে আসছিল। সর্বশেষ জামাতে ইসলামী স্বাধীনতা বিরোধী চক্র দেশে-বিদেশে বসে ইউটিউব-সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের অবদানের কথা মুছে ফেলার জন্য মিথ্য অপপ্রচার চালাচ্ছে।
ইউটিউবে এমনও প্রচার করা হচ্ছে যে, মুক্তিযোদ্ধারা যখন বাংলাদেশকে প্রায় স্বাধীন করে ফেলছিল তখন ভারতীয় বাহিনী মুক্তি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। অথচ বাস্তবতা এটাই যে ভারতের বীর সৈনিকরা সরাসরি পাকিস্তানের বাহিনীর বিরুদ্ধে আকাশ, নৌ ও স্থল পথে লড়াই না করলে শত বছরেও হানাদারদের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা সম্ভব হত না।
মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেছেন, নানা অপপ্রচারের মাঝেও, নতুন প্রজন্ম যাতে ইতিহাসের সত্যিটা একটু জানার চেষ্টা করেন সেই জন্যই এই ভাস্কর্য ও চিত্রকলা স্থাপন করা হয়েছে।
ভাস্কর্য ও চিত্রকলাগুলির কোনও নামকরণ করা হয়েছে কী-না জানতে চাইলে মেয়র বলেন, জেলা প্রশাসক ভবনের সামনে চৌরাস্তার মোড়টাকে ‘স্বাধীনতা স্কোয়ার’ নাম দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
বাকি দু'টি স্মৃতিসৌধের নাম এখনও ঠিক করা হয়নি। তবে নামকরণের বিষয় অনেকটা জেলা পরিষদের অনুমোদনের ওপর নির্ভর করছে।
নামকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালীর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আইনজীবী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, মেয়র খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। নবনির্বাচিত জেলা পরিষদের সদস্যরা প্রথম অধিবেশনেই নামকরণ ঠিক করে অনুমোদন দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। এধরণের ভাস্কর্য, চিত্রকলা ও স্মৃতিসৌধ প্রতিটি জেলা, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংযোগ স্থলে স্থাপন করা দরকার বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
এসি
আরও পড়ুন