মধ্যরাত থেকে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট
প্রকাশিত : ২১:০৬, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

লাগাতার নৌ ধর্মঘটে নামছেন নৌযান শ্রমিকরা। শনিবার রাতের প্রথম প্রহর থেকে তাদের এ ধর্মঘট শুরু হবে। নিয়োগপত্র ও খাবার ভাতা দেওয়াসহ ১১ দফা দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দেয় বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।
দীর্ঘদিন ধরে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শ্রমিকরা বলে জানান নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম। তিনি বলেন, ‘লঞ্চ মালিকপক্ষ শুধু আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন করেনি। গত বুধবারও সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু আবারও আশ্বাস। তাই শ্রমিকরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধর্মঘটে যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়ায় আমরা ধর্মঘটে যাচ্ছি। আমরা আন্দোলন করেছিলাম, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলাম। মালিকপক্ষ বলেছিল, আমাদের দাবিদাওয়া পূরণ করে দেবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো দাবিদাওয়া পূরণ করেনি।’
নৌ শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি হলো: নদী খনন, পাইপ লাইনের বদলে নৌযানে জ্বালানি তেল সরবরাহ, মাস্টার/ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় দুর্নীতি ও সনদ উত্তোলনে হয়রানি বন্ধ করা, মার্চেন্ট শিপের অনভিজ্ঞ সনদধারীদের অভ্যান্তরীণ নৌ-পথে নিয়োগ বন্ধ করা, শ্রমিকদের জন্য ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, ওভারলোড নিষিদ্ধ করা, পর্যাপ্ত মুরিং বয়ার ব্যবস্থা করা, নৌ শ্রমিকদের ছুটি, বিশ্রামাগার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন বলছে, নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে যাওয়া অযৌক্তিক। কারণ তাদের মূল দাবিগুলো মেনে নিয়ে লঞ্চ মালিকপক্ষ ২০১৬ সালে নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে পাঁচ বছরের একটি চুক্তি করেছিল। সে চুক্তির মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হবে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আখতার হোসেন জানান, বুধবারের সভায় নৌ পরিবহন খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেয়ার বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে আগামী মার্চের মধ্যে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। তবে দাবি পূরণের আশ্বাসে গত বুধবার ধর্মঘট তুলে নেয় শ্রমিকরা। এরপর আজ আবার ধর্মঘটের ডাক এল।
এ ধর্মঘটের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিপাকে পড়বেন ব্যবসায়ীরাও। দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা নৌপথে মালামাল পরিবহন করেন বলে ব্যবসায়ের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হবে।
এর আগে শতভাগ খাদ্যভাতা ও সুপেয় পানির খরচ আদায়সহ ১৫ দফা দাবিতে গত ২৬ নভেম্বর থেকে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন নৌযান শ্রমিকরা। পরে শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে ২৭ নভেম্বর দুপুরে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়।
তবে শাহ আলম বলেন, ‘ঐ সময় আমাদের ১৫টি দাবির মধ্যে শুধু বেতন স্কেল ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছিল। বাকি ১৪টি দাবি পূরণ করা হয়নি।’
এমএস/এসি
আরও পড়ুন