যশোরে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত

করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ ও দুই ডোজ নেয়ার পরও ভাইরাসটির ওমিক্রন ধরনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন দুজন- এমনটাই দাবি করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

আক্রান্ত ওই দুই রোগীর নমুনায় জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের দেহে সাব-ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ।

মঙ্গলবার গবেষণার এই ফল প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে ওই দুই ব্যক্তি সার্স-সিওভি’র ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিএ.৪ ও বিএ.৫ নামের সাব-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।

অধ্যাপক জাহিদ বলেন, আক্রান্ত দুজন ব্যক্তিই পুরুষ। তাদের একজনের বয়স ৪৪ এবং আরেকজনের বয়স ৭৯ বছর। তারা দুজনই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন।

এদের একজন কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ এবং অন্যজন দুই ডোজ নিয়েছেন। একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং আরেকজন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের শরীরে জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন মৃদু উপসর্গ রয়েছে বলে ড. জাহিদ জানান।

ওমিক্রনের এই দুটি সাব ভ্যারিয়েন্ট চলতি বছরের জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছিল জানিয়ে এই গবেষক বলেন, মে মাসের শেষ দিকে দক্ষিণ ভারতেও এটি শনাক্ত হয়।

এই সাব ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা সংক্রমণের পঞ্চম ঢেউ এবং সাম্প্রতিককালে ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ এর জন্য দায়ী বলে মনে করছেন গবেষকরা। ভ্যাকসিন নেয়া ব্যক্তিরাও এই সাব ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। আগামী দিনে এই সাব ভ্যারিয়েন্ট বর্তমানে সংক্রমণশীল অন্যান্য সাব ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

ড. জাহিদ বলেন, “বিএ.৪ ও বিএ.৫ সাব ভ্যারিয়েন্টে স্পাইক প্রোটিনে ওমিক্রনের মতোই মিউটেশন দেখা যায়। তবে তার সঙ্গে এই সাব-ভ্যারিয়েন্টে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো স্পাইক প্রোটিনের ৪৫২ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডে মিউটেশন থাকে। এছাড়া এই সাব-ভ্যারিয়েন্টে স্পাইক প্রোটিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ৪৮৬ নম্বর অ্যামাইনো অ্যাসিডেও মিউটেশন দেখা যায়।”

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই সাব ভ্যারিয়েন্ট মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহজেই ফাঁকি দিতে সক্ষম। এ জন্য মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই।”

এনএস//